ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইসলামি বক্তা মাওলানা শরীফুল ইসলাম ভূইয়া নূরীর ওপর হামলা চালিয়ে জিহ্বা কাটা ও মারধরের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। র্যাব-৯ ও আখাউড়া থানা পুলিশের অভিযানে চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বিজয়নগর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের মৃত হেলিম ভূইয়ার ছেলে আসামি জাকির হোসেন জাক্কু (৪৮), একই গ্রামের হাজী আমির আলী ভূঁইয়ার ছেলে মাহবুবুল আল শিমুল (৩৩), উপজেলার চাওড়া দৌলতবাড়ী আব্দুর রহমানের ছেলে সুমন (৩৫) ও কুমিল্লার দেবিদ্বারের মৃত শিরু মিয়ার ছেলে এবং বর্তমান চাওড়া দৌলতবাড়ীর বাসিন্দা মো. আমিরুল ইসলাম রিমন (২০)।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে র্যাবের একাধিক দল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন স্থান থেকে জাক্কু, শিমুল, সুমন ও আমিরুলকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তারা জানিয়েছেন, মাহফিলে ওই ইসলামি বক্তার বক্তব্যের কিছু অংশ তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। সে কারণে তারা হামলা চালিয়েছেন। এতে ওই ইসলামি বক্তার জিহ্বা কেটে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পান। এর আগে সোমবার রাত দেড়টার দিকে বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে শাহিনুর ইসলামকে গ্রেপ্তার করে আখাউড়া থানা পুলিশ। তাকে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। এ নিয়ে এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আহত ইসলামী বক্তা শরীফুল (৩৮) সদর উপজেলার চাপুইর গ্রামের কাজী আব্দুর রফিক ভূইয়ার ছেলে। তিনি বিজয়নগর উপজেলার শ্রীপুর ইসলামীয়া ফাজিল মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক। বাংলাদেশের বিভিন্নস্থানে ওয়াজ মাহফিলে বক্তা হিসেবে ওয়াজ করেন তিনি। গত শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে বিজয়নগর উপজেলায় ওয়াজ মাহফিল শেষে বাড়ি ফেরার পথে আখাউড়া উপজেলার রামধননগর রেলক্রসিং এলাকায় দুর্বৃত্তরা তার উপর হামলা চালায়। হামলায় তার জিহ্বার সামনের সামান্য অংশ কেটে গেছে। আহত মাওলানা শরীফুল ইসলাম ভূইয়া নুরী বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। গত রোববার রাতে আহতের চাচা মাওলানা আবদুল বাছির ভুইয়া বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় সদর উপজেলার ঘাটিয়ারা গ্রামের মো. রায়হান (৩০) ও বিজয়নগর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের মো. জাক্কু (৪৮) নামের দুইজনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৭জনকে আসামী করা হয়।
র্যাব-৯ ক্যাম্পের অধিনায়ক উইং কমান্ডার মুমিনুল হক বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে র্যাবের কাছে স্বীকার করেছেন। ধর্মীয় কোনো সংগঠনের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।’
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুল ইসলাম বাংলাদেশ বুলেটিনকে বলেন, জিহ্বা কেটেছে সত্য। তবে যেভাবে বলা হচ্ছে জিহ্বা টেনে কেটে ফেলা হয়েছে, ঘটনা সেরকম নয়। গাড়ি দিয়ে যাচ্ছিল। সেসময় রাস্তার পাশ থেকে বাঁশ দিয়ে আঘাত করেছে। বাঁশের আঘাত চোয়াল, মুখ, গাল ও ঠোঁটে লেগেছে। বাঁশের কারণে নাকি দাঁতের কারণে জিহ্বার অংশ কেটেছে তা নিশ্চিত নয়। এঘটনায় থানা পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বাবু/জেএম