কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৫ মার্চ যে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে তা পরিকল্পিত নাশকতা বলে প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। ক্যাম্পের ভেতরে সন্ত্রাসী গোষ্টিরা আধিপত্য বিস্তার করতে বা এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোনও ঘটনার জেরে আগুন দেওয়ার ঘটনাটি ঘটেছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরপরেই তার কারণ জানতে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন কর্তৃক গঠিত সাত সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। যেখানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মামলা, নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান ও গোয়েন্দা তৎপরতা, ৩৬০ ড্রিগ্রি সিসিটিভির ক্যামেরা বাড়ানোসহ ১২টি সুপারিশ করা হয়েছে।
রবিবার ( ১২ মার্চ) দুপুর ২টায় তদন্ত কমিটির প্রধান জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন৷ তিনি জানান, বিকাল সাড়ে ৩টায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। এরপর আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। এডিএম আবু সুফিয়ান আরও জানান, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে আলাপ করে ঘটনার প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সুপারিশগুলো হলো, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্রতিটি ব্লকের রাস্তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি চলাচল উপযোগী করা, ব্লকের রাস্তার পাশে পানির চৌবাচ্চা তৈরি, আশ্রয়কেন্দ্রের ত্রিপলের পরিবর্তে ভিন্ন কিছু যা অপেক্ষাকৃত কম দাহ্য পদার্থের তৈরি এমন কিছুর ব্যবহার, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জন্য পৃথক ফায়ার সার্ভিস ইউনিট গঠন, ক্যাম্পের অভ্যন্তরে যত্রতত্র মার্কেট করা থেকে বিরত এবং বড় রাস্তার পাশ ছাড়া অন্যস্থানে দাহ্য পদার্থ আউটলেট করা থেকে বিরত, ঘনবসতিপূর্ণ অনেক স্থানে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে অগম্য বিবেচনায় ক্যাম্পের প্রবেশমুখে লে-আউট স্থাপন, আগুন লাগলে নেভানোর কাজে রোহিঙ্গাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা তৈরি। ক্যাম্পের ব্লকে ব্লকে ওয়ারলেস টাওয়ার স্থাপন ও ৩৬০ ডিগ্রি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, এক ক্যাম্প থেকে অন্য ক্যাম্পে পালানো রোধে নিরাপত্তা বেস্টনি স্থাপন।
উল্লেখ্য, ৫ মার্চ বিকেল ৩টার দিকে উখিয়ার বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডে ঘরসহ ২ হাজার ৮০৫টি নানা স্থাপনা এবং ১৫ হাজার ৯২৫ জন রোহিঙ্গা ক্ষতিগ্রস্ত হন।
বাবু/জেএম