রবিবার ১৩ জুলাই ২০২৫ ২৯ আষাঢ় ১৪৩২
রবিবার ১৩ জুলাই ২০২৫
সিন্ডিকেট, অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ায় অভিযোগ: শিক্ষা অফিসার
রাশেদুল ইসলাম, কক্সবাজার, (চট্টগ্রাম)
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০২৩, ৪:১৯ PM
আমি যোগদান করার পূর্বে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কিছু ব্যক্তিদের হাতে ছিল আমাদের শিক্ষকদের সার্ভিস বই বলে জানিয়েছেন উখিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার ৷ তিনি বলেন, আমি যোগদানের পর প্রথমে এসব অনিয়ম বন্ধ করি ৷ শুরু থেকে যখন অনিয়মের বিরুদ্ধে আমি কাজ করেছি তখন থেকে এসব ব্যক্তি এবং সিন্ডিকেটের কিছু শিক্ষক মিলেই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলা শুরু করেছেন ৷

মঙ্গলবার (২১মার্চ) অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে উখিয়া শিক্ষা অফিসার গুলশান আক্তার বাংলাদেশ বুলেটিনকে এসব কথা বলেন ৷

তিনি বলেন, তারা এইখানে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কাজ করত ৷ যা সম্পূর্ণ অনিয়ম এবং ‘আইন পরিপন্থী’ কাজ ৷ যোগদানের পূর্বে উপজেলার শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি গড়ে ছিল ৭৫ থেকে ৭৮%  বর্তমানে উপস্থিতি গড়ে এখন ৮৩%  ৷ 

তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকরা জাতির বিবেক তথ্য উপাত্ত এবং বস্তুনিষ্ট সংবাদ পরিবেশন জাতি আপনাদের কাছে আশা করে ৷ আপনারা উখিয়ার ৭৮ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে আমার বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে দেখেন ৷ আমি কি অনিয়মের বিরুদ্ধে কাজ করেছি, নাকি নিজেই অনিয়ম করেছি ৷

শিক্ষকদের প্রতি স্বজনপ্রীতির বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা অফিসার বলেন, আমি কোন শিক্ষকদের স্বজনপ্রীতি করেনি ৷ সকল শিক্ষক আমার কাছে সমান ৷ দায়িত্বকালের শুরু থেকে শিক্ষকদের দাবি নিয়ে কাজ করেছি ৷

গুলশান আক্তার বলেন, গত ইউপি নির্বাচনে আমি সরকারের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বে ছিলাম ৷ আপনারা প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে জিজ্ঞেস করেন কারো কাছ থেকে কোন ধরনের আর্থিক লেনদেন বা কোন বিষয়ে অনিয়ম করেছি কিনা ! যদি কেহ প্রমাণ দিতে পারে আমি চাকরি ছেড়ে দেব ৷ অথচ সম্প্রতি কিছু ব্যক্তিরা গণমাধ্যমে আমাকে নিয়ে অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ করেছে ৷

জানা গেছে, ২০২২ সালে কক্সবাজার জেলার শ্রেষ্ঠ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হয়েছেন গুলশান আক্তার। তিনি উখিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। ২০২২ সালের আগষ্ট মাসে জেলা শিক্ষাপদক-সম্পর্কিত বাছাই কমিটির সভায় তাঁকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হয়। ২০১২ সালেও তিনি চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রেষ্ঠ শিক্ষা কর্মকর্তা মনোনীত হয়েছিলেন।

গুলশান আক্তার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন ২০০৫ সালে। ২০২১ সালে উখিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। ২০১৮ সালে গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে তিনি যুক্তরাজ্যে পড়তে যান। মাস্টার অব সায়েন্স ইন এডুকেশন (লিডারশিপ) ডিগ্রি অর্জনের পর গত বছর জানুয়ারিতে দেশে ফিরে কর্মস্থলে যোগ দেন।

এইটা ছাড়া ও ২০২১ সালের ২২ ফ্রেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত আমার দায়িত্বকালে উপজেলার ১৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ হয়েছে, ৮টি বিদ্যালয়ের চতুর পাশের প্রাচীর হয়েছে, বর্তমানে ঝরে পড়ার হার ২.৮৪৫৷

উত্তর পুকুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইসরাত জাহান বাংলাদেশ বুলেটিন কে বলেন , ২০২০ সালে প্রথামিক বিদ্যালয়ে আমার চাকরি হয় ৷ কিন্তু দীর্ঘ দেড়টি বছর আমি বেতন পাইনি ৷ ২০২১ সালের দিকে বর্তমান শিক্ষা অফিসারের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং ওনি অনেক ডকুমেন্ট কালেক্ট করে আমার বেতনের ব্যবস্থা করেছেন ৷ আমি বর্তমানে বেতন পাই ৷ ওনার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি ৷

মরিচ্যাপালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল হক বাংলাদেশ বুলেটিনকে বলেন, আমি অবশ্যই সত্যটা বলব ৷ আমার চোখে তার কোন অনিয়ম দেখেনি ৷

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি ৷

চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা উপপরিচালক ড.মোশফিকুর ইসলাম বাংলাদেশ বুলেটিনকে বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ আমরা পেয়েছি ৷ তার আলোকে একটা তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে কিন্তু এখনো তদন্ত শেষ হয়নি ৷ সঠিক এবং সত্য বিষয়টাই তদন্ত করে বের হয়ে আসবে আশা করছি ৷

বাবু/এনএইচ
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »


Also News   Subject:  সিন্ডিকেট   শিক্ষক   চট্টগ্রাম  







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত