চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামীকাল শুরু হচ্ছে পবিত্র মাস রমজান। শান্তি-সম্প্রীতি ও সংযমের বার্তা নিয়ে এলেও এই মাস ঘিরে মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের কারণে স্বস্তি নেই ভোক্তাদের। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি তাদের বাড়িয়েছে অস্বস্তি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায়ও প্রতিদিনই বাজারে উত্তাপ ছড়াচ্ছে নিত্যপণ্যের দাম।
যেখানে কয়েকদিন আগেও সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে ছিল বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী । সেখানে রমজান মাসকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে নিজেদের মত করে। এতে করে সাধারণ মানুষ রমজানের বিভিন্ন জিনিসপত্র ক্রয় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরজমিনে বাজারগুলোত ঘুরে দেখা গেছে, গত দুইদিন আগেও যেখানে ১ কুড়ি কলা মিলত ৬০ টাকায় আজকে দাম রাখা হচ্ছে ১৫০ টাকা। সেই সাথে গতকাল যেখানে বেগুন বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা কেজি তা আজকে দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০/১১০ টাকা কেজি। ডিম ৪৫ টাকা থেকে দাম বেড়ে হালি প্রতি ৬০ টাকা হয়েছে। আলু ২০ টাকা থেকে বেড়ে ২৫ টাকা হয়েছে। শসার কেজি ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা হয়েছে।
পোল্ট্রি মুরগির দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে অনেক আগে থাকলেও রমজান মাসকে সামনে রেখে প্রতি কেজিতে আরো ২০-৩০ টাকা করে বেড়েছে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে, খাসি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১১শ টাকায়। রমজানের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন,ছোলা বুট, খেসারির ডাল, মুড়ি, বেসন,পেয়াজ, রসুন, আদা, চিনি,তৈল সব ধরণের মসলা বাজারসহ সবকিছুর দাম-ই এখন সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।
এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে অনিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থা, প্রশাসনের মনিটরিং অভাবসহ সিন্ডিকেটকে দায়ি করছে মাধ্যমে সাধারণ মানুষ।
বাজার করতে আসা পৌরশহরের তারাগন এলাকার টিপু মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, রমজানের বাজার করতে এসে দাম শুনে আমি চিন্তিত,কয়েকদিন আগে যে পণ্যটি দাম এক রকম ছিল রমজানে চলে আসায় তার দাম কয়েক গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা যারা মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিস কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। রমজান আসলে মনে হয় ব্যনসায়ীরা দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় নেমে যায়। বাজারের এমন মূল্যে আয় থেকে ব্যয়ের পরিমান বেড়ে যাচ্ছে। এখন সংসার সামলানো কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দিন মজুর মোঃ রহিম মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, দিনে এনে দিনে খাই, রমজান মাস চলে এসেছে তাই রমজানের বাজার করতে এসেছি। কিন্তু বাজারে এসে দামের যে পরিস্থিতি দেখতেছি বাজার করে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারব কিনা জানি না। আমরা যারা দিন মজুর কত টাকাই বা রোজগার করি, আমাদের মত নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে গেছে সব জিনিস পত্র।বাজারের যে পরিস্থতি সৃষ্টি হয়েছে এতে করে আমাদের মত নিম্ন আয়ের মানুষ না খেয়ে থাকতে হবে।
বাজার মনিটরিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা বলেন, পবিত্র মাস মাহে রমজান উপলক্ষে আমারা উপজেলা প্রশাসন নিয়মিত বাজার মনিটরিং করব। অতিরিক্ত মূল্য বাড়িয়ে ব্যবসা করার কোন সুযোগ নেই। যারা অতিরিক্ত দামে পূণ্য বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। পবিত্র মাস মাহে রমজানে সকাল-বিকাল নিয়মিত আমাদের বাজার মনিটরিং অব্যাহত থাকবে।
বাবু/ এনবি