ক্রমশ বেড়েই চলেছে মাছ, মাংস, ডিম, সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম। ফলে বেশ অস্বস্তিতে রয়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকা ব্রয়লার মুরগির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি কমেছে ৫০-৬০ টাকা। একইসঙ্গে কমেছে ডিমের দামও। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপে উৎপাদনকারী চার প্রতিষ্ঠান দাম কমানোর ঘোষণা দেওয়ার পর ব্রয়লার মুরগির বাজারে প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন সাধারণ ক্রেতারা। তবে অস্বস্তি দেখা গেছে নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে।
মুরগি
শুক্রবার (৩১ মার্চ) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০-২২৫ টাকায়। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ২৭০-২৮০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকায়, যা আগে ছিলো ৩৫০ টাকা। প্রতি কেজি লেয়ার কিনতে ক্রেতাদের গুণতে হচ্ছে ৩১৫-৩২০ টাকা। এদিকে ডিমের দামও কিছুটা কমেছে। আজ প্রতি হালি ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। আর দেশি মুরগি ৮০ টাকায়। হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা হালিতে।
চলতি রমজান শুরুর আগেই লেবুর দাম বেড়েছিল লাফিয়ে লাফিয়ে। শেষ দফায় প্রথম রোজায় লেবুর হালি ৮০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। ছোট ও মাঝারি আকারের প্রতি হালি লেবুর দাম ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। তবে মাত্র চারদিনের ব্যবধানে এই দামে মিলছে এক ডজন লেবু। আর প্রতি হালি লেবু পাওয়া যাচ্ছে ২০ টাকায়। আজ রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ছোট ও মাঝারি আকারের প্রতি ডজন লেবু বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। এছাড়া বড় আকারের লেবুর হালি ২০-৩০ টাকায় নেমেছে।
মাছ
রোযার প্রথম দিন থেকে বেড়েই চলছে মাছের বাজার, আজ ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর তথ্য অনুযায়ী বাজারে আকার ভেদে আজ রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। ইলিশ মাছ আকার ভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১১০০ টাকা। পাবদা মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া মাছ ২০০-২৪০ টাকা। শোল মাছ আকারভেদে ৬০০-১২০০ টাকা। চিংড়ি মাছ ৫০০-৭০০ টাকা। পোয়া মাছ ৪০০-৬০০ টাকা। কই মাছ ২৫০-৩০০ টাকা।
অপরদিকে আজ বাজারে গরুর মাংস আগের দামেই কেনাবেচা হচ্ছে। প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকা। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১১০০ টাকা দরে।
সবজি
এদিকে চাহিদা কম থাকায় কিছুটা কমেছে সবজি দাম। বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি শসা ৫০-৬০ টাকা, লম্বা ও গোল বেগুনের কেজি ৮০ টাকা, টমেটো ৪০-৫০ টাকা, শিমের কেজি ৬০ টাকা, করলার কেজি ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। চাল কুমড়া প্রতিটি ৫০-৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০, পটল ৮০, ঢেঁড়স ৮০, কচুর লতি ১০০, পেঁপে ৩০-৪০, বরবটি ৮০ ও ধুন্দুল ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে।
মুদি
এদিকে রমজানকে কেন্দ্র করে কিছুটা বেড়েছে মুদি পণ্যের দাম। আজ খোলা চিনি প্রতি কেজি ১১৫ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খোলা আটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। প্যাকেট আটার কেজি ৬৫ টাকা। দুই কেজির প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। এছাড়া দেশি মসুর ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা দরে। ইন্ডিয়ান মসুরের ডালের কেজি ১২০-১২৫ টাকা। বাজারে সয়াবিন তেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৮৭ টাকা দরে। এসব বাজারে লবণের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪০ টাকা দরে। শুকনা মরিচ ৪০০-৪৪০ টাকা।
বাজারে আজ লুজ সয়াবিন তেলের প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। ১ লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের দাম ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা। ২ লিটার সয়াবিন তেলের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৩৭০ থেকে ৩৭৫ টাকা। আর ৫ লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের দাম ৮৭০ থেকে ৮৯০ টাকা। লুজ পাম ওয়েলের দাম প্রতি লিটার ১২৫ থেকে ১৩৫ টাকা।
মশলা
আজ বাজারে আদা (দেশী) প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে১৮০-১৫০ টাকা। হলুদ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৯০-২২০ টাকা। জিরা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৬০ টাকা। দারুচিনি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৩০-৫২০। এলাচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০০-২৫০০ টাকা। ধনে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৭০। তেজপাতা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৮০ টাকা।
চাল
বাজারে আজ সরু চাল (নাজির/ মিনিকেট) প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা করে। মাঝারি চাল (পাইজাম/ লতা) বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা দরে। মোটা চাল (স্বর্ণা/ চায়না/ ইরি) প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৬ থেকে ৫০ টাকায়।