বাগেরহাটের কচুয়ায় বিয়ের প্রলোভনে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে ধর্ষন ও ইচ্ছার বিরুদ্ধে গর্ভপাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা হাপিজা বেগম (৪০) বাদি হয়ে কচুয়া উপজেলার খলিশাখালী গ্রামের মোস্তাফা কামাল মল্লিকের ছেলে আসিবুল হাসান বাপ্পী (২৮) কে আসামী করে বাগেরহাট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-০১ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, হাপিজা বেগমের কন্যা ২০২১ সালে মঘিয়ার একটি মাদ্রাসায় দশম শ্রেনীতে পড়ালেখা করত। মাদ্রাসায় যাতায়াতের সময় পাশ্ববর্তী আসিবুল হাসান বাপ্পী প্রতিনিয়ত রাস্তার সামনে দাড়িয়ে থাকতো ও বিভিন্ন ভাবে উক্ত্যক্ত করত। বিষয়টি ভুক্তভোগী পরিবারকে জানালে তার মা হাপিজা বেগম আসিবুল হাসান বাপ্পীর পিতা মোস্তফা কামাল মল্লিক ও চাচা শামীম আহসান বাবুলকে জানান। এতে তারা কোন কর্নপাত না করে বিষয়টি হেলায় উড়িয়ে দেন। এতে আসিবুল হাসান বাপ্পী আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে ও ভুক্তভোগীর সাথে ঘর সংসার করাসহ বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে প্রেমে আকৃষ্ট করে।
প্রেমের এক পর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হলে ভুক্তভোগীর মা ছেলের পরিবারকে বিষয়টি আবারো জানায়। তারা ভুক্তভোগী মেয়েটির পড়া -লেখা শেষ করেই তাদের ঘরে তুলবে বলে মিথ্যা আশ্বাস দিতে থাকে। এরপরেও ভুক্তভোগী মাদ্রাসা ছাত্রী ও ছেলে আসিবুল হাসান বাপ্পীর সম্পর্ক চলমান থাকে ও তারা সকলের চোখ ফাকি দিয়ে দিন ও রাতের বিভিন্ন সময় একান্তে দেখা করেন। একপর্যায়ে বিয়ের করার শর্তে ভুক্তভোগী মাদ্রাসা ছাত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষন করে।
এরপরে একাধিকবার বিভিন্ন প্রলোভনে তারা দৈহিক মেলামেশা করে। ধর্ষনের ফলে ভুক্তভোগী মাদ্রাসা ছাত্রী অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। এ ঘটনায় গত ৯ জানুয়ারী আসিবুল হাসান বাপ্পী ভুক্তভোগী ও তার মাকে নিয়ে বাগেরহাট একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করাতে আসেন। আল্ট্রাসনো গ্রাম রিপোর্টে জানা যায় ভুক্তভোগী ৮ সপ্তাহের গর্ভবতী। বিষয়টি ভুক্তভোগীর মা ছেলের পরিবারকে তাদের পূত্রবধূ হিসেবে গ্রহন করবার অনুরোধ করেন। তারা কোন পদক্ষেপ না নিয়ে বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদান করেন। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ভুক্তভোগী তার প্রেমিক আসিবুল হাসান বাপ্পী তাদের বাড়িতে নিয়ে যেতে বলেন। ভুক্তভোগী তার সরল বিশ্বাসে মাকে সাথে নিয়ে তার বাড়িতে যান। এ সময় তারা তাকে গর্ভপাত করার পরামর্শ দেন। এত তারা জোর প্রতিবাদ জানান এ সময় তারা গর্ভের সন্তান নষ্ট করবার জন্য পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে জোর পূর্বক ভুক্তভোগীকে ঔষধ খাইয়ে দেন। এক পর্যায়ে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, মারধর ও গলাধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে তাদের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে অসুস্থ্য অবস্থায় ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর মা হাপিজা বেগম বলেন, আমার মেয়ের বয়স যখন পাঁচ বছর তখন তার পিতার সাথে আমার সম্পর্ক নষ্ট হয়। আমি রাস্তায়, মানুষের বাড়ি, কাপড় বিক্রী করে অনেক কষ্ট করে সন্তানকে লেখাপড়া করাচ্ছি। তারা আমার মত দরিদ্র অসহায় পরিবারের মেয়ের সাথে যা করেছে তা কোন ভাবেই মানতে পারছি না। সামাজিক ভাবে মুখ দেখাতে পারছি না। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর প্রেমিক আসিবুল হাসান বাপ্পী বলেন, আমার সাথে তার মোবাইলে কথা হতো। কোন খারাপ সম্পর্ক হয়নি। তারা আমার নামে মিথ্যা রটাচ্ছে।
-বাবু/এ.এস