নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় কেন্দুয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি সৈয়দ আব্দুল ওয়াহাব ও সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী চৌধুরী কাজল এর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে সংগঠনটির উপদেষ্টা পরিষদ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কেন্দুয়া প্রেসক্লাবের ২৭ জন নিয়মিত সদস্য ও দুইজন দাতা সদস্য মিলে ২৯ জন সদস্য রয়েছে। এছাড়াও রয়েছেন পাঁচজন উপদেষ্টা।
এদের মধ্যে পদাধিকার বলে প্রধান উপদেষ্টা স্থানীয় সংসদ সদস্য, অন্যান্য উপদেষ্টা হলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও), কেন্দুয়া পৌরসভার মেয়র ও ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রেসক্লাবের উপদেষ্ঠা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.নুরুল ইসলাম এর হাতে অনাস্থার অভিযোগ পোঁছে দেন ভোরের কাগজ পত্রিকার কেন্দুয় উপজেলা প্রতিনিধি বিজয় রজক, আমাদের সময় পত্রিকার কেন্দুয়া প্রতিনিধি রাখাল বিশ্বাস, অদম্য বাংলা পত্রিকার বার্তা সম্পাদক আয়নাল হক, মানব জমিন পত্রিকার কেন্দুয়া প্রতিনিধি মজিবুর রহমান।
এ বিষয়ে শুক্রবার (৭ এপ্রিল) ভোরের কাগজ পত্রিকার প্রতিনিধি ও প্রেসক্লাবের সাবেক সহ সভাপতি বিজয় রজক বলেন, চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি কেন্দুয়া প্রেসক্লাবের আয়োজনে হস্ত ও কুটির শিল্প মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলা উপলক্ষে প্রেসক্লাবের কার্যকরী ও সাধারণ পরিষদের একাধিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে কিছু সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গৃহিত ও অনুমোদিত হয়।
কিন্তু সভাপতি ও সম্পাদক গৃহিত সিদ্ধান্তের বাইরেও কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে রেজুলেশনে লিপিবদ্ধ করেন। যাহা বিভিন্ন ব্যক্তি, জাতীয় দৈনিকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্যে সরবরাহ ও প্রচার করায় ভাইরাল হয়।
এর মধ্যে ২৭ মার্চ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় "এমপি ও মেয়রকে বয়কট প্রেসক্লাবের" এই শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি কেন্দুয়া প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের দৃষ্টি গোছর হয়। এ ধরনের প্রশ্নবিদ্ধ সংবাদ প্রকাশ হলে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এতে কেন্দুয়া প্রেসক্লাবের সাংবাদিকগণ বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। অথচ এই সংবাদটি ভিত্তিহীন।
এ ব্যাপারে ২৭ মার্চ প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামের আহ্বানে ও সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক এর সভাপতিত্বে ২৮ মার্চ বিকালে এক জরুরি সভায় মিলিত হয়ে অধিকাংশ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে কেন্দুয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপনের প্রস্তাবনা আনা হয়। একই সাথে "এমপি ও মেয়রকে বয়কট প্রেসক্লাবের" এই শিরোনামে ভিত্তিহিন সংবাদের বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। এছাড়াও সংগঠন পরিপন্থী কর্মকান্ডের জন্য প্রধান উপদেষ্টা সহ সম্মানিত উপদেষ্টাগণ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষ্যে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন বলেও সভায় সিদ্ধান্ত হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দুয়া প্রেস ক্লাবের উপদেষ্টা মন্ডলী বরাবর তারা একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন বলে জানান তারা।
এ অভিযোগের ব্যাপারে জানতে শুক্রবার (৭ এপ্রিল) কেন্দুয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি সৈয়দ আব্দুল ওয়াহাব সাংবাদিকদের জানান, প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্রে সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে অনাস্থার কোন নিয়ম নেই। আমাদের যদি কোন ভুল থাকতো তাহলে আমরা আলোচনা করে শেষ করতে পারতাম। কিন্তু তারা তা না করে উপদেষ্ট মন্ডলীর বরাবর অভিযোগ দেওয়াতে ক্লাবের সুনাম নষ্ট করেছে।
এ ব্যাপারে গত শুক্রবার কেন্দুয়া প্রেস ক্লাবের উপদেষ্টা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.নূরুল ইসলাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি - সম্পাদকের বিরুদ্ধে অনাস্থার অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি অনাস্থার অভিযোগটি পেয়েছি। বাকী উপদেষ্টাগণের সাথে আলোচনা করে গঠনতন্ত্র মোতাবেক পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
-বাবু/এ.এস