সোমবার ৩০ জুন ২০২৫ ১৬ আষাঢ় ১৪৩২
সোমবার ৩০ জুন ২০২৫
হত্যা মামলার আসামিরা জামিনে মুক্ত
নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে নিহতের পরিবার
আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৩, ৪:২৩ PM
আখাউড়ায় আব্দুল হেকিম ওরফে টাক্কা হত্যা মামলায় গ্রেফতারের আগেই প্রধান আসামি রাসেল মেম্বারসহ  পাঁচ আসামি হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন পেয়ে এলাকায় বীরদর্পে ঘুরা-ফেরা করছেন। এতে আব্দুল হেকিম টাক্কার পরিবার ও এই মামলার সাক্ষীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন নিহত টাক্কার মা রুপশা বেগম। 

শুক্রবার (৭ এপ্রিল) বেলা ৩টায় তাদের বাড়িতে টাক্কার মা আরও বলেন, আসামিরা গ্রেফতারের আগেই জামিন পাওয়ায় তারা হতবাক। এখন তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সাক্ষীরাও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তাদের অনেকেই এখন সাক্ষ্য দিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন।

ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে অনুসন্ধানে জানা যায় গত ১৭ মার্চ শুক্রবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের আব্দুল হেকিম ওরফে টাক্কা (৩২) কে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। রাতে ঢাকা নেওয়া পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত আব্দুল হেকিম টাক্কা ওই গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় দুপক্ষের নারী-পুরুষসহ অন্তত আটজন আহত হন। এ ঘটনায় আব্দুল হেকিম টাক্কার মা রুপশা বেগম ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার রাসেলসহ ১৪ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা ও নিহতে মা রুপশা বেগমের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আখাউড়া উত্তর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী আনোয়ারপুর-কল্যাণপুর ৯নং ওয়ার্ড থেকে রাসেল আহমেদ সদস্য নির্বাচিত হয়। এরপর থেকে রাসেল নিজেকে এই এলাকার সম্রাট হিসেবে ঘোষণা করেন। সীমান্ত সংলগ্ন হওয়ায় এই এলাকার কিছু মানুষ মাদক কারবারের সাথে জড়িত। স্থানীয় মেম্বার হিসেবে প্রভাব খাঁটিয়ে রাসেল মাদক সাম্রাজ্য একক নিয়ন্ত্রণ করতে চাইত। আর এতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় আব্দুল হেকিম টাক্কা। নিহত টাক্কা মেম্বারকে মাসোহারা দিতে অস্বীকার করে। 

এর পর থেকে রাসেল মেম্বার টাক্কাকে বিভিন্ন সময় হুমকি ধমকিসহ নানাভাবে হয়রানি করে আসছিল। এর ধারাবাহিকতায় গত তিন মাস আগে এক রাতে টাক্কাকে কল্যাণপুর গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে আটক করে। পরকীয়ার অভিযোগে ওই নারীসহ তাকে থানায় সোপর্দ করেন রাসেল মেম্বার। ওই ঘটনায় জেল হাজত থেকে ছাড়া পেয়ে টাক্কা বাড়িতে আসলে রাসেল মেম্বারসহ তার লোকজন বিভিন্ন সময় টাক্কাকে পরকীয়া সংক্রান্ত বিষয়ে অপমান অপদস্ত করে কথা বলতেন। আর রাসেল মেম্বারের সমস্ত অনৈতিক কর্মকান্ডে সহযোগী হলেন একই গ্রামের বাসিন্দা রনি। ঘটনার কিছু সময় আগে এই রনি নিহত টাক্কাকে ফোন করে বিভিন্ন উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে তাকে সাহস থাকলে গ্রামে আসার কথা বলে ডেকে এনে পরিকল্পনা মাফিক এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়।

বর্তমানে রাসেল মেম্বারসহ পাঁচ আসামি তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। এতে করে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান। এ ব্যাপারে আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, এমন কোন অভিযোগ আমার কাছে আসে না। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাবু/জেএম
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত