শুক্রবার ২০ জুন ২০২৫ ৬ আষাঢ় ১৪৩২
শুক্রবার ২০ জুন ২০২৫
অদৃশ্য বাধায় নির্মাণ কাজ বন্ধ, পরিত্যক্ত ভবনে চলছে ইমিগ্রেশন
কাঙ্ক্ষিত সেবা না পাওয়ার অভিযোগ যাত্রীদের
আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: বুধবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৩, ৪:১০ PM
জরাজীর্ণ এ ইমিগ্রেশন ভবনটি আরও এক দশক আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে এখনও এ ভবনেই চলে দুই দেশের যাত্রীদের ইমিগ্রেশন কাজ। এখানে যাত্রীদের বসার জন্য নেই পর্যাপ্ত জায়গা, নেই সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার। বলছি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন ভবনের কথা।

১৯৯৪ সালে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আন্ত:দেশীয় বাণিজ্য শুরু হয়। এই বন্দর এখন উত্তর-পূর্ব ভারতের সাথে স্থলপথে বাংলাদেশের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। প্রতি মাসে যাত্রীদের ভ্রমণ কর বাবদ প্রায় ১ কোটি টাকা রাসজ্ব আসছে বন্দর থেকে। তবে সম্ভাবনাময় এ বন্দরে যাত্রীদের কাঙ্ক্ষিত সেবা না পাওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আসছে ঈদুল ফিতরে যাত্রী চাপে এ দুর্ভোগ আরও বাড়ার শঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।
যাত্রী চাপে এ দুর্ভোগ আরও বাড়ার শঙ্কা

যাত্রী চাপে এ দুর্ভোগ আরও বাড়ার শঙ্কা


প্রতি বর্ষায় বৃষ্টিতে ইমিগ্রেশন ভবনের সামনে জমে হাঁটু পানি। এছাড়া ইমিগ্রেশন ভবনে পর্যাপ্ত পাখা না থাকায় গরমের সময় দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠেন যাত্রীরা। পাশাপাশি বন্দরে যাত্রীদের জন্য নেই ট্রলি সুবিধাও।

অপরদিকে, পার্শ্ববর্তী ভারতের আগরতলায় এক ছাদের নিচেই যাত্রীদের ইমিগ্রেশন, কাস্টমস ও ব্যাগেজ স্ক্যানিং সুবধিা থাকলেও আখাউড়ার চিত্র ভিন্ন। প্রথমে ব্যাংকের বুথে ট্র্যাভেল টেক্স পরিশোধ করে জরাজীর্ণ কাস্টমস ভবনের ছোট্ট একটি কক্ষে কাস্টমস কাজ শেষ করে সেখান থেকে বেরিয়ে ব্যাগেজ স্ক্যানিংয়ের জন্য যেতে হয় বিজিবি চৌকিতে। এরপর সেখান থেকে আবার যেতে হয় পরিত্যক্ত ইমিগ্রেশন ভবনে। বন্দরে এই অব্যবস্থাপনায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। 

যাত্রী দুর্ভোগ দূর করতে ২০১৬ সালে পুরাতন ইমিগ্রেশন ভবনের পাশে নতুন ছয় তলা বিশিষ্ট আধুনিক ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। তবে সীমান্তের দেড়শ গজের মধ্যে স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না জানিয়ে কাজে বাধা দেয় বিএসএফ। দুইদেশের উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার পর নকশা পরিবর্তন এবং সর্বোচ্চ ৩৫ ফুট উচ্চতা বা দুইতলা ভবন নির্মাণের শর্তে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। একতলার কাজ শেষ হলেও বিএসএফের কয়েক দফার বাধায় ২০২০ সালের মাঝামাঝি থেকে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।
 ২০২০ সালের মাঝামাঝি থেকে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে

২০২০ সালের মাঝামাঝি থেকে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে


সিলেটের বাসিন্দা স্বর্ণলতা রায় বলেন, এ বন্দরে অবকাঠামোর কিছু দুর্বলতা আছে। অবকাঠামো আরও উন্নত করা উচিত। কারণ আমাদের পাশ্ববর্তী ভারত ইমিগ্রেশনে সুযোগ সুবিধা অনেক ভালো। আমরাও চাই ভারতের নাগরিকরা এদেশে বলুক আমাদের ইমিগ্রেশনের অবকাঠামো ও সেবা অনেক ভালো। পর্যটককে আকৃষ্ট করতে হলে এ জায়গাগুলোতে আরও কাজ করতে হবে বলে মনে করি। সকলে মিলে উদ্যোগে এ সমস্যা দূর করা যাবে। 

ঢাকার বাসিন্দা মো. রাজু বলেন, এপার এবং ওপারের ইমিগ্রেশনে অনেক তফাৎ। এখানে অবকাঠামো, প্রফেশনালিজম, চেকিং এগুলোতে আরও উন্নত করতে হবে। প্রতিদিন এক হাজারের বেশি লোক এ চেক পোষ্ট দিয়ে যাতায়াত করে। এই সংখ্যাটা বাড়তে থাকলে এ বন্দরটি লাভজনক বন্দর হতে পারে। যাত্রী সংখ্যা বেশি হলে এখানে বসার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নাই। ওয়াশ রুম নাই। বৃষ্টি হলে দাঁড়ানোর মত পর্যন্ত জায়গা নাই। এসব সমাধানে দ্রুত এসব সমস্যা দূর করতে হবে। 
যাত্রীদের বসার জন্য নেই পর্যাপ্ত জায়গা

যাত্রীদের বসার জন্য নেই পর্যাপ্ত জায়গা


এ ব্যাপারে আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টের পুলিশ ইনচার্জ স্বপন চন্দ্র দাস বলেন, নতুন ভবন নির্মাণ কাজ চলমান আছে। দুই দেশের মধ্যে কথা চলছে। আশা করি শিগগিরই এ সমস্যা সমাধান হবে। যাত্রীদের সুপেয় পানির জন্য ফিল্টার আছে। আমরা আন্তরিকার সাথে কাজ করছি। যাত্রী সেবার জন্য আমদের যে জনবল আছে তা দিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাব।

বাবু/জেএম
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত