শুক্রবার ১১ জুলাই ২০২৫ ২৭ আষাঢ় ১৪৩২
শুক্রবার ১১ জুলাই ২০২৫
রিজার্ভ নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই : বাংলাদেশ ব্যাংক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৩, ১১:২৬ PM
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মানদণ্ড অনুযায়ী রিজার্ভের হিসাব করা হলে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক। তিনি বলেন, সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক, এডিবি, আইডিবি ও জাইকাসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার সাথে বেশকিছু ঋণচুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। এসব ঋণের অর্থ ছাড় হলে রিজার্ভের পরিমাণ বাড়বে। আমাদের রেমিট্যান্স প্রবাহও ইতিবাচক। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের সতর্কতামূলক পদক্ষেপের কারণে আমদানি ব্যয়ও অনেক কমে এসেছে।

আজ মঙ্গলবার আইএমএফের প্রতিনিধি দলের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈঠকের পর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, আগামী জুন থেকে আইএমএফের মানদণ্ড অনুযায়ী ব্যালেন্স অব পেমেন্টস এবং ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম-৬) রিজার্ভের হিসাবায়ন করা হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের মানদণ্ড অনুযায়ীও হিসাব করা হবে। দুটো হিসাবই প্রকাশ করা হবে।

বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল গতকাল ‘স্টাফ ভিজিট’ করতে বাংলাদেশে এসেছে। এটি একটি রুটিন ওয়ার্ক। সদস্য সব রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী প্রতি বছর সফরটি তারা করে থাকেন। এবারের সফরটিও সে রকম। তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বিভিন্ন বিভাগের বৈঠকে অর্থনৈতিক সূচকগুলোর হালনাগাদ তথ্য নিয়ে আলোচনা করবেন। সেখানে আইএমএফের ঋণের অর্থের ব্যবহারের অগ্রগতি সংশ্লিষ্ট বিষয়াদিও নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু করে দিনভর খণ্ড খণ্ড বৈঠক করে ঢাকায় সফররত আইএমএফের প্রতিনিধি দল। ওইসব বৈঠকে আর্থিক খাতের নীতি ও কাঠামো সংস্কারের যেসব উদ্যোগ গত জুলাই থেকে নেওয়া হচ্ছে তার বাস্তবায়িত অংশের সুবিধা তুলে ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশেষ করে ব্যাংকের পরিদর্শন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে ঝুঁকিভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করা, ঋণ বিতরণে স্বচ্ছতা আনা ইত্যাদি।

আইএমএফের ঋণের প্রথম কিস্তি পাওয়ার পর বেশকিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ এবং কিছু প্রক্রিয়াধীন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জ্বালানি তেল থেকে ভর্তুকি তুলে দিয়ে মূল্যবৃদ্ধি করা। ২য় দফায় জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ানোর ফলে অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়ে সে বিষয়ে পৃথকভাবে জানতে চেয়েছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল।

এবারের সফরের আলোচিত বিষয়ে মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, আইএমএফ স্টাফ ভিজিট করে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে কোনো দেশের অর্থনৈতিক তথ্যগুলো আদান-প্রদান করে। সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলোর মধ্যে মুদ্রানীতিতে নেওয়া বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা, জিডিপি প্রবৃদ্ধি, রাজস্ব আদায়, বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, বিনিময় হার কেমন, মূল্যস্ফীতি কেমন; তার পর্যালোচনা ও এচিভমেন্ট (অর্জন) নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘অর্থনীতিতে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ দেখা যাচ্ছে ও এটিকে এড্রেস (সমাধানে) করতে কী পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে তার ধারণা নিয়েছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল।’

জানা গেছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের চাপের মুখে অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফেরাতে আইএমএফে ঋণের আবেদন করে বাংলাদেশ। ফেব্রুয়ারিতে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের মধ্যে প্রথম কিস্তিতে ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ডলার পাওয়ার আগে ও পরে বাংলাদেশ পরামর্শ অনুযায়ী বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের দাম বাড়িয়ে ভর্তুকি কমানোসহ আর্থিক খাতের কাঠামো ও নীতি সংস্কারে বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে। প্রথম কিস্তি পাওয়ার পর থেকেই পরামর্শ অনুযায়ী আর্থিক খাতের কাঠামো ও নীতি সংস্কারের বেশকিছু বাস্তবায়নও করেছে বাংলাদেশ।

আগামী অক্টোবর মাসে দ্বিতীয় কিস্তি ছাড় ও অগ্রগতি মূল্যায়নের জন্য আইএমএফ মিশন আসবে ঢাকায়। তার আগে নিয়মিত সফরের অংশ হিসেবে স্টাফ ভিজিটে এসেছে সংস্থার প্রতিনিধিরা। নিয়মিত এ সফরে ঋণ সংশ্লিষ্ট আর্থিক খাতের তথ্যগুলোও ঝালিয়ে নিচ্ছে আইএমএফ প্রতিনিধি দলটি।

প্রথম কিস্তির ঋণের অর্থের ব্যবহার ও ২য় ঋণের প্রাপ্তি নিয়ে এবারের সফর প্রসঙ্গে মেজবাউল হক বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলোর ক্ষেত্রে আমরা বেশকিছু পরিবর্তন আনার কাজ করছি। সেগুলোর প্রতিফলন আগামী মুদ্রানীতিতে দেখা যাবে। এর মধ্যে এক্সচেঞ্জ রেটের ক্ষেত্রে আমরা ইতোমধ্যে একক রেটের কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। এ ছাড়া আগামী জুন থেকে আইএমএফের মানদণ্ড অনুযায়ী রিজার্ভের হিসাবায়ন করা হবে।

বাবু/মম
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত