সেনাবাহিনীর সাথে আধা-সামরিক বাহিনীর চলমান সংঘাতের কারণে অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে সুদান। এতে নিরাপত্তাজনিত কারণে দেশটিতে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিক সুদান ছাড়ছেন। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ দেশটিতে দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছে।
এদিকে, সুদানি জেনারেলদেরকে শান্তি আলোচনায় বসার জন্য তেলআবিব সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তেলআবিবের পক্ষ থেকে সুদানি সেনাবাহিনীর কমান্ডার আব্দুল ফাত্তাহ আল-বোরহান এবং আধা-সামরিক বাহিনী (আরএসএফ) এর কমান্ডার মোহাম্মদ হামদান দোগালু এর মধ্যে আলোচনার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
সুদানের ক্ষমতাসীন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা গত কয়েক বছর ধরে আমেরিকার নীতি ও ইচ্ছা বাস্তবায়নের মাধ্যমে শাসন ক্ষমতায় নিজেদের অবস্থানকে আরো পাকাপোক্ত করেছে এবং আমেরিকা ও তার মিত্রদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা পেয়েছে। আমেরিকার কাছ থেকে এই আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে সুদানের সামরিক সরকারের কর্মকর্তারা ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিতে সম্মত হয় এবং সে অনুযায়ী খার্তুম ও তেলআবিবের মধ্যে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।
বাস্তবতা হচ্ছে, উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে বিপুল খনিজ সম্পদ রয়েছে এবং ভূকৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকার কারণে বহু দশক ধরে মুসলিম এ দেশটির ওপর ইসরায়েলের লোলুপ দৃষ্টি ছিল। ইসরায়েল সবসময়ই সুযোগমতো সুদানের কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে সুদানের ব্যাপারে তাদের লক্ষ্য হাসিলের চেষ্টা করে এসেছে। যেমন, সুদানকে দুইভাগ করে দক্ষিণ সুদানকে স্বাধীন করার ক্ষেত্রে ইসরায়েলের ভূমিকা ছিল। দক্ষিণ সুদান স্বাধীন হওয়ার সময় জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা সেসময় জানিয়েছিলেন ইসরায়েল দক্ষিণ সুদানের বিচ্ছিন্নতাকামীদেরকে অস্ত্র সরবরাহ করতো যে কারণে আফ্রিকার ওই দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে গৃহযুদ্ধ চলে। ওই যুদ্ধ শেষ পর্যন্ত সুদানকে বিভক্ত করে ফেলে।
আলজেরিয়ায় সুদানের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত এসাম আওয়াজ মোতাওয়ালি দক্ষিণ সুদান স্বাধীন হয়ে যাওয়ার পেছনে ইসরায়েলকে দায়ী করে বলেছেন, দক্ষিণ সুদান ছাড়াও সুদানের মূল ভূখণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ দারফুর এলাকাসহ আরো অনেক এলাকাকে বিচ্ছিন্নতার দিকে ঠেলে দেয়ার জন্য ইসরায়েল চেষ্টা করেছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি।
সূত্র : টাইমস অব ইসরায়েল
বাবু/এ আর