মাঠের পর মাঠ সোনার ধানে ছেয়ে গেছে। যে জমিগুলো কোনো এক সময় একেবারে অনাবাদি ছিলো, বর্ষার সময় তলিয়ে যেতো জমি, আজ সেই মাঠে এখন দুল খাচ্ছে সোনালী ফসল। আর এই চিত্রের বাস্তব রূপ দিয়েছেন গফরগাঁওয়ের সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল। তারই একক প্রচেষ্টায় কয়েকটি পরিকল্পনার বাস্তব রূপ পায় কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে।
খবর নিয়ে জানা যায়, ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে কয়েকটি খাল ও নদী খননের ফলে কৃষিতে বিপ্লব হয়েছে। বেড়েছে আবাদি জমির পরিমাণ, ফলে বৃদ্ধি পেয়েছে জমিতে উৎপাদন। স্থানীয় সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেলের চেষ্টায় কৃষকের মুখে এখন হাসি ফুটেছে।
উপজেলার ‘হাফাইল বিলের খাল সংস্কার’ প্রকল্পে ৯ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন করায় উপজেলার লংগাইর, গফরগাঁও ও মশাখালী ইউনিয়নের ১৪টি বিলের প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমি চাষাবাদের আওতায় এসেছে। উপজেলার আন্ধাপুরি খাল খনন প্রকল্পটি সালটিয়া ইউনিয়নের আন্ধাপুরি বিল হতে উৎপত্তি হয়ে রৌহা, পুখুরিয়া, দৌলতপুর ও বখুরা মৌজার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে যশরা ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে শিলা নদীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছে। পলি দ্বারা ভরাট হয়ে খালটি অস্তিত্ব হারাতে বসেছিল। এর ফলে বৃষ্টি, অনাবৃষ্টি বা ভারী বর্ষণের ফলে বড় বিল ও খালের দু’পাশের প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে যেত। এসব আবাদি জমি বছরের অধিকাংশ সময় পানিতে নিমজ্জিত থাকার কারণে কৃষকরা বছরে একটির বেশি ফসল ফলাতে পারতেন না। এ খাল খননের ফলে হাজারো কৃষকের স্বস্তি ফিরে এসেছে। তিনটি মৌসুমেই কৃষক ফসল ফলাতে পারছেন।
এছাড়াও লংগাইর ইউনিয়নে শীলা খালটি বাগবাড়ী গ্রাম থেকে মশাখালী ইউনিয়নের শীলা রেল ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার খাল খননের ফলে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে উপজেলার বুক চিরে বয়ে চলা শীলা নদী পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে পুনঃখনন করা হয়েছে। এ নদী খননের ফলে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রায় দুই লাখ মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে।
পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের মরা খাল খননের ফলে এখন আর তাদের বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। ফলে বাম্পার ফলন হচ্ছে। কৃষকরা ক্ষুদ্র সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে খাল থেকে জমিতে পানি নিয়ে একাধিক ফসল উৎপাদন করতে পারছেন। পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের খনন চলমান আছে। এই প্রকল্পটি শেষ হলে সারা বছর নদে পানি থাকবে এতে উপকৃত হবে কৃষক। সুবিধাভোগী কৃষক ঘাগড়া গ্রামের রুহুল আমিন বলেন, ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল এমপি আমাদের জমিতে সেচের সুবিধা বৃদ্ধি করতে খাল খনন করে দিয়েছেন।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন বাদল বলেন, সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেলের সহযোগিতায় খাল ও নদীগুলো পুনঃখনন করা হয়েছে। তিনি কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নে অনেক কাজ করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, খাল ও নদী খননের ফলে আবাদি জমির পরিমাণ বেড়ে কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। জলাবদ্ধতার দূর হয়ে কৃষকের সেচের সুবিধা বৃদ্ধি পেয়েছে।
উপজেলা বিএসডিসির উপ-সহকারী প্রকৌশলী কাউসার বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেলের সহযোগিতায় প্রকল্প সমূহ বাস্তবায়ন হয়েছে। আরও কিছু প্রকল্পের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে আশাকরি শিগগিরই এগুলো বাস্তবায়ন হবে। এতে গফরগাঁও ইউনিয়নের ৮০ ভাগ এই সেচ প্রকল্পের আওতায় আসবে এবং মশাখালী ও লংগাইর ইউনিয়নের ৪০ ভাগ জমিতে ভূ-উপরিস্থ পানি দিয়ে কৃষক সেচ দিতে পারবেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। আমার সংসদীয় এলাকায় তিনি কয়েকটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন তাই গফরগাঁওবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। এই প্রকল্প সমূহের মাধ্যমে পতিত জমি আবাদি হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় কৃষি উৎপাদন ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাবু/জেএম