শুধু রাজপথেই নয়, কারাগারেও সরকারের হিংস্রতা বিরাজমান বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব সদ্য কারামুক্ত রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘সেখানে রাজবন্দিরা অমানবিক জীবনযাপন করছেন। আমাকে একা একটি প্রিজন ভ্যানে দাঁড়িয়ে আদালতে আনা হতো। আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। গাড়ি ব্রেক করলে আমি পড়ে যেতাম। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে আমার জন্য চেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়।’
আজ বুধবার রাজধানীর আদাবরের বাসায় নেতাকর্মীরা ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে গেলে এসব কথা বলেন তিনি। দল ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দিনভর রিজভীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীরা আজ অনেক বেশি উজ্জীবিত। এই সরকার জুলুম-অত্যাচার করে নেতাকর্মীদের দমিয়ে রাখতে পারেনি। আজকে যে লড়াই সেটি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই, বাকস্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার লড়াই। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে যে আন্দোলন হচ্ছে, তারই প্রতিফলন আজ আমি দেখতে পাচ্ছি।
‘এই লড়াই কোনো ব্যক্তি বা দলের জন্য নয়। এটি দেশ বাঁচানোর লড়াই, একনায়কতন্ত্র থেকে মুক্ত হওয়ার লড়াই।’
রিজভী আক্ষেপ করে বলেন, ‘ঈদের আগে আমি সবকয়টি মামলায় জামিন পেলেও ঠুনকো অজুহাতে আমাকে মুক্তি দেওয়া হয়নি, পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ করতে দেওয়া হয়নি।’
আটকের পর থেকে পরিবারের খোঁজ-খবর রাখার জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
ওই সময় রিজভীর স্ত্রী আরজুমান আরা বেগমসহ বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্মমহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, আব্দুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী সপু, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ডা. রফিকুল ইসলাম, অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া, আসাদুল করিম শাহীন, অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, আমিনুল হক, তানভীর আহমেদ রবিন, ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, আমিনুল ইসলাম, তারিকুল আলম তেনজিং, ঢাকা জেলার সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, মৎস্যজীবী দলের মো. আবদুর রহিম, ওমর ফারুক পাটোয়ারী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের নেতা কাদের গনি চৌধুরী, রাশেদুল হক, বাছির জামাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, আরিফুর রহমান তুষার, যুবদলের মেহবুব মাসুম শান্ত, সোহেল আহমদ, ছাত্রদলের সাবেক নেতা ওমর ফারুক কাওসার, ঢাবি ছাত্রদলের রাজু আহমেদসহ অসংখ্য নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় চার মাস তথা ১৪০ দিন পর গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান রুহুল কবির রিজভী। ঈদের আগেই ৫০ মামলার সবকটিতেই জামিন পেয়েছিলেন তিনি।
বাবু/মম