চট্টগ্রাম মহানগরীর ডবলমুরিং থানাধীন পোস্তার পাড় এলাকায় রেললাইন সংলগ্ন স্থানে স্থুপ করে রাখা পুরাতন টায়ারের গোডাউনে লাগা আগুন অবশেষে নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিস। একই সাথে এই স্থান দিয়ে সাময়িক বন্ধ রাখা ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে৷
শনিবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে দেওয়ান হাট ওভার ব্রিজের নিচে রেললাইনের পাশে এই আগুন লাগার ঘটনা ঘটে৷ সময় বাড়ার সাথে সাথে আগুন কিছুটা বিস্তার লাভ করে। শুরু থেকে ফায়ার সার্ভিস প্রচলিত পানি ছিটিয়ে আগুন নেভাতে চেষ্টা চালায়৷ এভাবে প্রায় দেড় ঘন্টা পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় পরবর্তিতে আগুন নেভাতে বিশেষ এক ধরণের ফোম ছিটানো হয়। দীর্ঘ সোয়া দুই ঘন্টার চেষ্টায় অবশেষে সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার এনামুল হক বাংলাদেশ বুলেটিনকে জানান, দুপুর পৌনে ১টার দিকে নগরীর দেওয়ানহাট পোস্তার পাড়ে টায়ারের গোডাউনে আগুন লাগার খবর পাই। যেহেতু টায়ার দাহ্য বস্তু তাই সেটার আগুন দ্রুত ছড়ায়। তবে আমাদের ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। দুপুর তিনটা নাগাদ আমরা আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রনে এনেছি। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্নয়ে কাজ চলছে বলে জানান তিনি।
টায়ারে স্থুপে আগুন লাগার ফলে নগরীর আগ্রাবাদ, দেওয়ান হাট, কদমতলী, টাইগার পাস সহ আশপাশের অনেক এলাকায় কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে৷ এই কালো ধোঁয়া বেশ ঝাঁজালো অনুভূত হয় বলে সেসব এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন৷ সিনিয়র সাংবাদিক মহসিন কাজী জানিয়েছেন, "আগুন জ্বলেছে দেওয়ানহাট পোস্তার পাড়ের টায়ারের গুদামে। অথচ সেই টায়ার পোড়া গন্ধ লাভ লেইন পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে। এই পোড়া গন্ধের কারণে বাসায় থাকা যাচ্ছে না।"
এদিকে, চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের মূল রেললাইনের পাশের এই আগুন লাগার ঘটনার পর সাময়িকভাবে চট্টগ্রাম স্টেশনে কোনো ট্রেন প্রবেশ করতে এবং বের হতেও পারেনি। এসময় ঢাকা থেকে আসা সোনার বাংলা ট্রেন চট্টগ্রাম স্টেশনে ঢুকতে পারেনি। এছাড়া মার্শাল ইয়ার্ড থেকে আসা বিজয় ও মহানগর এক্সপ্রেসও আটকে ছিল৷ তবে বেলা সোয়া টার পর আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ হওয়ায় আবারো ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার জাফর আলম।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, মূলত রেল লাইনের পাশের জায়গায় দীর্ঘদিন যাবৎ পুরাতন টায়ার স্থুপ করে রেখে অনেকটা গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে৷ এই এলাকায় একাধিক পুরাতন টায়ার রিপায়ারের প্রতিষ্ঠান আছে৷ চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের প্রবেশ দ্বারে রেল লাইনের পাশে এভাবে বছরের পর বছর পুরাতন টায়ার স্থুপ করে রাখাটা ঝুঁকিপূর্ণ হলেও কেউ কখনো এসবে বাঁধা দেয়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বরং দিন দিন এসব পুরাতন টায়ারের স্থুপ আরো বেড়েই চলেছে৷
বাবু/জেএম