নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে এখন সবুজের মাঝে হলুদের সমারোহ। যতদূর পর্যন্ত চোখ যায় ততই সবুজে ঢাকা মাঠগুলো অপরুপ সুন্দরে ছেঁয়ে আছে। ওই সমারোহ দেখে রঙিন হয়ে উঠেছে প্রান্তিক কৃষকের স্বপ্ন। এ যেন সোনালী স্বপ্নের ছড়াছড়ি। প্রতিদিনই পাল্টে যাচ্ছে মাঠে থাকা ধানের চেহারা। নতুন ধানের আগমনী বার্তা কৃষকের পরিবারে এনেছে আনন্দের ঢেউ।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা কোনো বিপর্যয় না ঘটলে ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন হাজারো কৃষক। এখন গোটা উপজেলা জুড়ে মাঠে মাঠে সবুজ সমারোহে পূর্বালী বাতাসে সোনালী ধানের শীষ হাওয়ায় দুলছে। আর সোনালী এই ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত হয়ে উঠছে কৃষকেরা। ধানের গাছগুলো সবুজের আভা কেটে হলুদ বরণ ধারণ করেছে।
বিগত বছরগুলোতে উপজেলায় বোরো ধানের ফলন এবং দাম ভাল পাওয়ায় চলতি মৌসুমে বোরো ধান চাষকে ঘিরে মাঠে মাঠে যেন উৎসব শুরু হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার চরাঞ্চলসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায় বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ জুড়ে হিমেল হওয়ায় দোল খাচ্ছে হাজারো কৃষকের স্বপ্ন। প্রতিটি শীষে যেন কৃষকের জীবনের স্বপ্ন ভবিষ্যৎ নির্ভর করে। মাঠে মাঠে রোপণকৃত বোরো ধান কয়েকদিনের মধ্যে কাটা মাড়াই শুরু হবে। অনেক স্থানে যান্ত্রিক কৃষিযন্ত্র ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার দিয়ে চলছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ে কাজ।
চর খড়িবাড়ী এলাকার কৃষক গোলাম রব্বানী বলেন, গত বছর বোরো চাষ করে দাম ভালো পেয়েছিলাম। এবারও সেই আশায় ৫ বিঘা জমি বোরো ধান রোপণ করেছি। ইতোমধ্যে ধানে পাক ধরেছে সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই ধান কাটাশুরু করতে হবে।
বালাপাড়া ইউনিয়নের চাষি হজরত আলী বলেন, গত মৌসুমে বোরো রোপণ করে ধানের ভালো ফলন পেয়েছিলাম সেই সাথে বাজার দর ভালো থাকায় মোটামুটি লাভের মুখ দেখেছিলাম।
টেপা খড়িবাড়ী ইউনিয়নের হুমুজ আলী চাষী বলেন, গত বছর ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করে বেশ লাভবান হয়েছিলাম। জমি চাষাবাদ খরচ ও সারের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় এবছর মাত্র ৪ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করছি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১১ হাজার ২শত ৫৪ হেক্টর। চাষ হয়েছে ১১ হাজার ২শত ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ সেকেন্দার আলী বলেন, এ বছরে ধানের আবহাওয়া ভালো। তাপে ধানের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। ইতোমধ্যে দু’একজন কৃষকরা ধান কাটতে শুরু করেছেন। উপজেলা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন দিয়ে বোরোধান কাটা শুরু হবে। এতে শ্রমিক সঙ্কট অনেকটা কমে আসবে। তা ছাড়া যেসব ক্ষেতে ধান নুয়ে পড়েছে সেসব ক্ষেতের ধান দ্রুত কাটার জন্য আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি।
-বাবু/এ.এস