প্রকৃত পরিচয় গোপন করে জালিয়াতির মাধ্যমে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসার নামে বিভিন্ন ব্যক্তির ১৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমার দেহরক্ষী ও পুলিশের নায়েক টারজান খীসার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১৭ মে) দুদকের রাঙ্গামাটি সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটি সহকারী পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ পুলিশের বরখাস্ত হওয়া নায়েক টারজান খীসা একজন সরকারি কর্মচারী হওয়া সত্ত্বেও প্রকৃত পরিচয় গোপন করে জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যবসায়ী পরিচয়ে ব্যাংকে হিসাব খোলা, লেনদেন করা এবং মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসার নামে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ৫ মাসে দ্বিগুণ লাভের প্রলোভন দেখিয়ে আমানত গ্রহণ করেন। ব্যক্তিদের নামে ২৩টি ব্যাংক হিসাবে ১৪ কোটি ৬৪ লাখ ৪২ হাজার টাকা স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তর করে আত্মসাৎ করেন তিনি। দণ্ডবিধির ৪২০/১৬৮ ধারা তৎসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪(৩) ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে আরও জানা যায়, টারজান খীসার তত্ত্বাবধানে অনলাইন ভিত্তিক বিটমানিগ্লোবানডটনেট (bitmoneyglobal.net) নামে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানি ২০১৬ সালের এপ্রিলে রাঙ্গামাটি শহরের বনরুপান্থ (সবজি বাজার) দীপ্ত প্লাজার ২য় তলার একটি দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে মডার্ন হারবাল সাইনবোর্ডের ব্যানারে কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করে। প্রকৃতপক্ষে ওই দোকানে মডার্ন হারবালের কোনো ওষুধপত্র ছিল না। টারজান খীসা বাংলাদেশ পুলিশের নায়েক পদে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমার দেহরক্ষী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
টারজান খীসা ওই প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক এমএলএম কোম্পানি হিসেবে সম্ভাব্য গ্রাহকদের মাঝে পরিচিতি তৈরি করে তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ ৫ মাসে দ্বিগুণ হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমানত সংগ্রহ শুরু করেন। গ্রাহক নিজেই ওয়েব সাইটের মাধ্যমে নিজের হিসাবের সর্বশেষ অবস্থা নিজেই দেখতে পারে। এমন নানাবিধ লোভনীয় কথায় অনেকেই দ্রুত প্রভাবিত হয়ে হিসাব খোলেন। আবার যারা আর্থিকভাবে অসমর্থ কিন্তু অন্য গ্রাহককে প্রভাবিত করতে সমর্থ তাদের টারজান খীসা টার্গেট করেন এবং নিজ অর্থে তাদের নামে হিসাব খুলে দিয়ে তাদের মাধ্যমে আরও নতুন নতুন গ্রাহক পেতে থাকেন। এভাবে ২০১০ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত টারজান খীসা নানা কৌশলে ওই টাকা আত্মসাৎ করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাবু/মম