চট্টগ্রাম নগরীর উপকূলীয় উত্তর কাট্টলী এলাকায় ১৫ টি পুকুরসহ প্রায় ১০০ একর সরকারি খাস জমি উদ্ধার করেছে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন৷ বৃহস্পতিবার (১৮ মে) সকাল ৯ টা থেকে বেলা ৩ টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার ( ভূমি) উমর ফারুকের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উত্তর কাট্টলী সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় ১৫টি পুকুরসহ প্রায় ১০০ একর সরকারি খাস জায়গা একটি চক্র অনেক বছর ধরে অবৈধভাবে দখল করে ভোগ করে আসছিলো। সম্প্রতি চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের নজরে বিশাল এ খাস জায়গার বেহাত হওয়া চিত্র ধরা পড়ে। পরক্ষণেই তিনি কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার ( ভূমি)কে সরকারি খাস জমিসহ পুকুরগুলো উদ্ধার করার জন্যে সার্বিক নির্দেশনা প্রদান করেন। তারই ফলশ্রুতিতে এই অভিযানের মাধ্যমে ১৫টি পুকুরসহ ১০০ একর খাস জমি উদ্ধার হলো। সরকারি এসব খাস জমির বাজার মূল্য প্রায় ৭০০ কোটি টাকা।
অভিযান পরিচালনাকারী সহকারী কমিশনার ( ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক বাংলাদেশ বুলেটিনকে বলেন, অভিযানের মাধ্যমে দীর্ঘদিন বেহাত হয়ে যাওয়া প্রায় ১০০ একর জমি উদ্ধার করেছি। একটি চক্র সরকারি এ জায়গাটি বহুবছর ধরে অবৈধভাবে দখল করে রেখেছিল।অভিযানে প্রায় ছোট বড় ৩০টির মতো অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।পাশাপাশি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। ১০টি সরকারি সাইনবোর্ড নির্দেশনাসহ টানানো হয়েছে যাতে করে অবৈধ অনুপ্রবেশ না হয়।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানান, ইতিপূর্বে সীতাকুণ্ড এলাকায় প্রায় ১৯৪ একর সরকারি খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা ১৫টি পুকুরসহ প্রায় ১০০ একর সরকারি খাস জমি উদ্ধার করেছি। দীর্ঘবছর ধরে একটি চক্র এ জায়গাটি অবৈধভাবে দখল করে আসছিলো। আজ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সম্পূর্ণ জায়গাটি সরকারের দখলে নিয়ে এসেছি।পাশাপাশি চট্টগ্রাম মহানগর ও উপজেলার বেদখল হওয়া সরকারি খাস জমি উদ্ধারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক জানান, মেরিন ড্রাইভের পাশে এই উদ্ধারকৃত জমিসহ প্রায় ৭৫০ একর জমি নিয়ে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, সংরক্ষিত বন, সাইক্লিং ট্র্যাক, বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র ইত্যাদি গড়ে তোলা হবে। তিনি আরও বলেন, উদ্ধার হওয়া জায়গাটিতে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সার্বক্ষণিক আনসার সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই নিষেধাজ্ঞাসহ ১০ টি সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে। এরপরেও যদি অবৈধভাবে কেউ এ জায়গায় প্রবেশ বা দখল করার চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযানে জেলা প্রশাসনের কর্মচারী, সিএমপি'র পুলিশ সদস্য ও বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন অংশ নেন৷
বাবু/জেএম