মঙ্গলবার ৮ জুলাই ২০২৫ ২৪ আষাঢ় ১৪৩২
মঙ্গলবার ৮ জুলাই ২০২৫
সাজা নির্ধারণে আলাদা শুনানি করতে হাইকোর্টের রায় স্থগিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: সোমবার, ২২ মে, ২০২৩, ৯:৫১ PM
ফৌজদারি মামলায় রায় ঘোষণার আগে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সাজা দেওয়ার বিষয়ে বিচারিক আদালত ও ট্রাইব্যুনালকে পৃথক শুনানি করতে হবে, হাইকোর্টের এই রায় আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত।

সোমবার (২২ মে) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট সারাদেশের বিচারিক আদালতের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে এক রায়ে বলেছেন, ফৌজদারি মামলায় রায় ঘোষণার আগে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সাজা দেওয়ার বিষয়ে বিচারিক আদালত ও ট্রাইব্যুনালকে পৃথক শুনানি করতে হবে। এ রায়ের বিষয়টি জানিয়ে সব আদালত ও ট্রাইব্যুনালের প্রতি সার্কুলার জারি করতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

যশোরের এক শিক্ষার্থী ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায়ে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। বৃহস্পতিবার রাতে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করা হয়। ৮৪ পৃষ্ঠার রায়টি লিখেছেন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ।

রায়ে বলা হয়েছে, ‘মামলায় যখন উভয়পক্ষের (বাদী-বিবাদী) চূড়ান্ত যুক্তি-তর্ক শেষ হবে, তখন অভিযুক্তকে দণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে উন্মুক্ত আদালতে বিচারককে সে অভিমত জানাতে হবে। এরপর বিচারক অভিযুক্তের শাস্তি বা সাজার বিষয়ে শুনানির জন্য সংক্ষিপ্ততম সময়ের মধ্যে একটি তারিখ নির্ধারণ করে দেবেন, যাতে উপযুক্ত বা আনুপাতিক সাজা আরোপ করা যায়।’

‘আতাউর মৃধা বনাম রাষ্ট্র’ মামলায় আপিল বিভাগের রায় উদ্বৃত করে হাইকোর্টের এ রায়ে বলা হয়েছে, ‘সাজা নির্ধারণের শুনানিতে পক্ষগুলোকে অভিযুক্তের অপরাধের সামাজিক প্রেক্ষাপট, অভিযুক্তের বয়স, চরিত্র, অর্থনৈতিক অবস্থা, ব্যক্তি বা সমাজের অভিঘাত, অপরাধের ধরণ অর্থাৎ অভিযুক্ত অভ্যাসগত, পেশাদার অপরাধী কি না, নাকি আকস্মিক অপরাধী ইত্যদি বিষয় তুলে ধরতে হবে।’

সাজা নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিচারকের মূল্যায়ন কি হবে, তা তুলে ধরে রায়ে বলা হয়েছে, ‘সে শুনানির ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি সাজা আরোপের ক্ষেত্রে বিচারককেও অপরাধীর এসব বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে। সেই সঙ্গে অভিযুক্তের ওপর শাস্তি আরোপের প্রভাব, বিলম্ব বিচারে অভিযুক্তের মানসিক পীড়ন এমনকি অপরাধীর সংশোধনের বিষয়টিও ভাবতে হবে। এর পরেই কেবল বিচারক অভিযুক্তের সাজার রায় ঘোষণা করতে পারবেন।’

প্রায় এক দশক আগে যশোরে চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে আনোয়ার হোসেন ও লাভলু নামে দুইজনের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ২৪ মার্চে মামলা হয়। দুই আসামির মধ্যে আনোয়ার মারা গেলে ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল লাভলুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

বিচারের পর ২০১৭ সালের ৩০ মে এ মামলার রায় দেন যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। রায়ে লাভলুকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। পরে নিয়ম অনুযায়ী লাভলুর মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য রায়সহ মামলার নথি হাইকোর্টে আসে, যা ডেথরেফারেন্স নামে পরিচিত। লাভলুও রায়ের বিরুদ্ধে জেল আপিল করেন। এই ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির পর গত ২৭ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। উচ্চ আদালত ডেথ রেফারেন্স খারিজ ও লাভলুর আপিল আংশিক গ্রহণ করে রায় দেন। রায়ে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে লাভলুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। তবে আসামির যাবজ্জীবনের রায় বহাল রেখেছেন চেম্বার আদালত।

বাবু/মম
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত