নেছারাবাদে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে কলি বেগম (২১) নামে এক গর্ভবর্তী নারীর মত্যু হয়েছে। রোববার রাতে উপজেলার আব্দুর রহমান হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ওই মহিলার সিজারিয়ান অপারেশনের পূর্বে অ্যানেস্থেসিয়া ইনজেকশন (অচেতন ঔষধ) দেয়ার পরে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ওই গর্ভবর্তীর স্বামী নূরে আলম শেখ সোমবার ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে বাদী হয়ে নেছারাবাদ থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় অ্যানেস্থেসিয়ার ডাক্তার মানবিক সরকারকে ১ নম্বর আসামি করে মোট সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ এজাহারভুক্ত ১নং আসামি ডা. মানবিক সরকার সহ ওই হাসপাতালের নার্স সানজিদা, ইয়াসমিন ও একাউন্টস ম্যানেজার উম্মে সায়মাকে গ্রেফতার করেছে। সোমবার (৫ জুন) সকালে লাশ ময়না তদন্তে পিরোজপুর মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
তথ্য সূত্রে জানাযায়, নাজিরপুর উপজেলার কলারদোয়ানিয়া গ্রামের নূরে আলম শেখ তার গর্ভবর্তী স্ত্রী কলি বেগমকে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য রোববার দুপুরে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করান। চারটার পরে ওই রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে বসিয়ে রাখা হয়। ছয়টার দিকে ডাক্তার মানবিক সরকার এসে তাকে অ্যানেস্থেসিয়া ইনজেকশন দেয়। ঐ সময় ডা. আসাদুজ্জামান অন্য একটি রোগীর অপারেশন করাচ্ছিলেন। একটু পরে রোগী অসুস্থ হয়ে পড়ে। নার্সরা এসে রোগীর অসুস্থতার খবর দেয়। এসময় ক্লিনিকের কর্তব্যরত ডাক্তাররা রোগীকে দ্রুত বরিশালে পাঠানোর মুহূর্তে রোগীর স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে ক্লিনিকের চেয়ার ভাঙচুর করে। এক পর্যায়ে স্বজনরা রাত আনুমানিক সাড়ে নটার দিকে অসুস্থ কলিকে নিয়ে নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্ব্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃতের স্বামী নূরে আলম শেখ অভিযোগ করেন, আব্দুর রহমান হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ এবং ডাক্তারদের অবহেলার কারণে আমার স্ত্রী সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। আব্দুর রহমান হাসপাতালে মার্কেটিং ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন গণি জানান, রোগী সুস্থ ছিলেন। বেলা চারটার দিকে ওটিতে নেয়া হয়। ডাক্তার মানবিক সরকার তাকে অ্যানেস্থেসিয়া ইনজেকশন দেয়ার পর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ডাক্তারের পরামর্শে তাকে বরিশালে পাঠাবার ব্যবস্থা করি ইতি মধ্যে রোগীর আত্মীয় স্বজনরা হাসপাতালের চেয়ার ভাঙচুর করে।
এ ব্যাপারে ওসি মো. জাফর আহম্মেদ জানান, এ ঘটনায় মৃতের স্বামী নূরে আলম শেখ বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। ইতিমধ্যে এজাহারভুক্ত ডা. মানবিক সরকারসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত ছাড়া মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাচ্ছে না। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বাবু/জেএম