চট্টগ্রাম নগরীতে বুধবারের (১৪ জুন) বিএনপির বিভাগীয় তারুণ্যের সমাবেশে যাওয়ার পথে কলেজ ও জামাল খান এলাকায় বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহাসিক ছবি ভাঙচুরের ঘটনার পর সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ২৪ জন নেতা কর্মীকে গ্রেফতার করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) নগরীর দামপাড়ায় সিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) আ স ম মাহতাব উদ্দিন।
তিনি বলেন, ১৪ জুন চট্টগ্রাম কলেজ গেটের সামনে নাশকতার ঘটনায় ৬০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২শ থেকে ২৫০ জনের নামে চকবাজার থানায় মামলা করা হয়েছে। পাশাপাশি কোতোয়ালি থানাধীন জামালখান এলাকায় বিভিন্ন দেওয়ালে অঙ্কিত বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের স্থিরচিত্র সম্বলিত ট্যাম্পার্ড গ্লাস, ম্যুরাল ভাঙচুর করার ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় ৭৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২শ থেকে ২৫০ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনার পর থেকেই সিএমপি'র বিভিন্ন শাখার একাধিক টিম নগরীর কোতোয়ালি, চকবাজার, বাকলিয়া, চাঁন্দগাও পুলিশ ও মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের অভিযানে ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে জামালখানে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুরের ঘটনায় মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি নোসাদ আল জাসেদুর রহমানের কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
একাধিক সূত্র বলছে, তারুণ্যের সমাবেশের নামে পুরো নগরী জুড়ে নাশকতার পরিকল্পনা করা হয়। তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক থাকায় সর্বত্র সেটা করা সম্ভব হয়নি। তবে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নগরীর কাজীর দেউরীর সমাবেশ স্থলে যাওয়ার পথে নাশকতা চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। এই কাজের জন্য চান্দগাঁও ও বাকলিয়া থেকে আসা মিছিলে স্থানীয় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতা কর্মীদের সাথে অন্যান্য এলাকার বিএনপি দলীয় ক্যাডারদের রাখা হয়। কোতোয়ালি থানা পুলিশ সমাবেশ স্থলে ফোকাস রাখবে সেটা জেনেই জামাল খানে হামলার সিদ্ধান্ত হয়। নাশকতার এই পরিকল্পনায় স্থানীয় কিছু শিবির ক্যাডার সরাসরি জড়িত ছিল। তারা মূলত চট্টগ্রাম ও মহসিন কলেজ শিক্ষার্থীদের সাথে বিবাদে জড়িয়ে দুটি ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছিলো।
বিকেলে জামালখান এলাকায় ভাঙচুর চালিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার পথে আসকারদিঘী এলাকায় আঞ্চলিক লোক প্রশাসন কেন্দ্রের কাঁচের নাম ফলক, সিসি ক্যামেরা ও মানবতার দেয়াল ভাঙচুর করে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আ স ম মাহাতাব উদ্দীন জানান, নাশকতার ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক, তাদের সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।