বন্ধুত্বের ভালোবাসা ও বন্ধন অমোঘ। সত্যিকারের বন্ধু তার বন্ধুর জন্য জীবন উৎসর্গ করতে দ্বিধাবোধ করে না। একজন একজন ভালো বন্ধু সব সময় আপদে-বিপদে বন্ধুর পাশে থাকে। অনেকে বলে “বিপদে বন্ধু চেনা যায়”। বন্ধু যদি দূরেও থাকে এরপরও ভালোবাসা কমে যায় না। সে প্রার্থনা করে, বন্ধু তুমি ভালো থেকো।
প্রকৃত বন্ধুর হৃদয়ের গভীরতা অনেক বিশাল, যেখানে সাম্প্রদায়িকতা নেই, শ্রেণি-বৈষম্য নেই, সাদা কালো বলে কোন বর্ণ নেই, সেখানে সবাই মানুষ।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বন্ধুত্ব ও ভালবাসা বিষয়ে বলেছেন "বন্ধুত্ব আটপৌরে, ভালবাসা পোশাকী। বন্ধুত্বের আটপৌরে কাপড়ের দুই-এক জায়গায় ছেঁড়া থাকিলেও চলে, ঈষৎ ময়লা হইলেও হানি নাই, হাঁটর নীচে না পৌঁছিলেও পরিতে বারণ নাই। গায়ে দিয়া আরাম পাইলেই হইল । কিন্তু ভালবাসার পোশাক একটু ছেঁড়া থাকিবে না, ময়লা হইবে না, পরিপাটি হইবে। নাড়াচাড়া টানাছেঁড়া তোলাপাড় সয়, কিন্তু ভালবাসা তাহা সয় না ।"
বন্ধুর প্রতি বন্ধুর রাগ- অভিমান থাকে, যা বন্ধুত্বকে অর্থবহ করে তুলে । আবার অর্থ বা সম্পদের বিনিময়ে ভালো বন্ধু পাওয়া যায় না । একজন ভালো বন্ধুর জন্য জীবন অনেক সময় ধন্য মনে হয়। আবার একজন খারাপ বন্ধুর জন্য জীবনে চরমমূল্য দিতে হয়।
বন্ধুত্ব মানে বিশ্বাস, বন্ধুত্ব মানে – পরস্পরের মাঝে সহযোগিতা, বন্ধুত্ব মানে বিপদে সময় পাশে থাকা, সুখে-দুঃখে এক সঙ্গে থাকা। বন্ধুত্ব মানে – জীবনের কোনো কোনো সময় নয়, বন্ধুত্ব সারাজীবনের জন্যে। তাই বন্ধু শব্দটা দুই অক্ষরের হলেও, এর গভীরতা কখনো মাপা যায় না।
জানা যায়, প্রতিবছর আগস্ট মাসের প্রথম রবিবার সারা বিশ্ব বন্ধু দিবস পালন করা হয়। ইংরেজীতে
বলা হয় (Friendship day) ১৯৩৫ সালে আমেরিকার সরকার বাহিনী এক ব্যক্তিকে হত্যা করে । দিনটি ছিল আগস্ট মাসের প্রথম শনিবার । তার প্রতিবাদে পরের দিন নিহত ব্যক্তির এক বন্ধু আত্মহত্যা করেন। তার পর হতে আমেরিকা সর্বপ্রথম বন্ধু দিবস পালন করে আসছে ।
১৯৯৭ সালে জাতিসংঘ বিশ্বময় বন্ধুত্বকে আলাদা অবস্থানে নিয়ে যায় । ২৭ এপ্রিল ২০১১ সালে জাতি সংঘের সাধারণ অধিবেশনে ঘোষিত হয় ৩০ জুলাই অফিসিয়ালি আন্তর্জাতিক বন্ধু দিবস। তবে ভারতসহ অনেক দেশ আগস্ট মাসের প্রথম রবিবার বন্ধু দিবস পালন করে থাকে।
লেখক : অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও গণমাধ্যমকর্মী