কয়েকদিনের ভারি বর্ষণের ফলে পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বৃহস্পতিবার পর থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত টানা ৬দিনের ভারি বর্ষণে জেলার ১৯৭টি স্থানে ছোট-বড় ভাঙন ও পাহাড় ধসে পড়েছে। পাহাড় ধসের কারণে জেলায় মোট ৩৮১টি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মধ্যে আশ্রয়ণেরও ঘর রয়েছে ১৩টি। ১০ জন আহত হয়েছেন। এসব তথ্য জানিয়েছেন, রাঙ্গামাটি উপজেলা ও জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসনের হিসাবে, ১৪টি ব্রিজ-কালভার্ট, ১৬টি বিদ্যুতের খুঁটি এবং জেলার ৬৮৩ একর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

এছাড়া রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কসহ জেলার ৭৫টি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে ৯টি স্থানে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ১২৪টি ঘর ও ৫টি হাটবাজার পানিতে ডুবে আছে। জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়ন ও জুরাছড়ির চারটি ইউনিয়নেরই নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তীব্র স্রোতের কারণে বন্ধ রয়েছে রাঙ্গামাটি-বান্দরবান সড়ক পথে চলাচলের চন্দ্রঘোনা ফেরি। জেলায় সোমবার পর্যন্ত মোট ২৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন ১ হাজার ৭২৭ জন মানুষ।
চলমান অতিবৃষ্টিতে জেলা সদরসহ কাপ্তাই, নানিয়াচর, বাঘাইছড়ি, রাজস্থলী, কাউখালি সড়ক ও আশাপাশের এলাকায় ১৯৭টি স্পটে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। সড়কে ভাঙ্গন দেখা দেওয়ায় নানিয়াচর উপজেলার ঘিলাছড়ি বুড়িঘাট সড়কে ভাড়ি যানচলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
রাঙামাটি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানান, আমরা সড়কে পাহাড় ধসে যেসব স্থানে মাটি ও গাছ পড়েছে তা দ্রুত সরাতে ব্যবস্থা নিচ্ছি। রাঙামাটি চট্টগ্রাম, রাঙামাটি খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি বান্দরবান সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সড়ক বিভাগে ৪টি টিম কাজ করছে। সওজের আওতাধীন প্রধান সড়কগুলো কোনটি বন্ধ নেই।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, উপজেলা ও জেলার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে আমারা সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছি,তবে যেসব স্থানে ভাঙন দেখা গেছে ঐসব স্থানে আপাতত ভারি যানবাহন চলাকালে একটু বিরতি রাখতে বলা হয়েছে, এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের মাইকিং প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে, নানিয়ারচরের চারটি ইউনিয়নেই আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা আছে।এসব আশ্রয় কেন্দ্রগুলো আমাদের সাথে জনপ্রতিনিধি ও গ্রাম পুলিশ তদারকি করছেন।
রাঙামাটি চট্টগ্রাম, রাঙামাটি খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি বান্দরবান সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সড়ক বিভাগে ৪টি টিম কাজ করছে। এছাড়া জেলার ৫টি ইউনিয়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে এবং জেলাজুড়ে বেশকিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বাবু/এ.এস