সোমবার ১৬ জুন ২০২৫ ২ আষাঢ় ১৪৩২
সোমবার ১৬ জুন ২০২৫
রাস্তা নয়, যেন মরণফাঁদ!
আমিনুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ
প্রকাশ: বুধবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৩, ৬:৪৮ PM
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর-মেঘশিমুল সড়কটি জনগণের মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন দুই কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক দিয়ে ওই অঞ্চলে বসবাসকারী পাঁচ গ্রামের শত শত মানুষ চলাচল করে। কিন্তু রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়া জনদুর্ভোগ এখন চরম আকার ধারণ করেছে। বৃষ্টির পানি জমে রাস্তায় কাদা -পানিতে একাকার হয়ে পড়েছে।  পথচারীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বর্ষা মৌসুমে এই রাস্তার করুণ অবস্থা হলেও দেখার কেউ নেই। অথচ রাস্তাটি ৫ গ্রামের হাজার হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা। উকুরিয়া, ঢাকুলী, জাগীর মেঘশিমুল, এবং জান্না গ্রামের চলাচলের একমাত্র রাস্তা এটি। প্রতিদিন শত শত মানুষের যাতায়াত, কৃষি পণ্য সরবরাহের একমাত্র রাস্তা এটি। বেহাল দশার কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে স্থানীয় কৃষকরাও।

স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বৃষ্টি হলেই একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে রাস্তাটি। বৃষ্টির ফোঁটা পড়ার পরই কাদা-পানিতে একাকার হয়ে যায়। প্রচণ্ড কাদায় চলতে গিয়ে অনেকেই পা ফসকে পড়ে গিয়ে গন্তব্যে যাবার আগেই বাড়িতে ফিরে আসতে বাধ্য হন। 

স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তার  জানান, রাস্তার মাঝে মাঝে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গোটা রাস্তা যেন খানাখন্দে ভরা। কোথাও কোথাও পুরো অংশ ভেঙে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে প্রতিনিয়তই স্কুল-কলেজের  শিক্ষার্থীসহ পথচারী ও স্থানীয় কৃষকদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সেলিম হোসেন জানান, বর্তমান সরকার যেখানে গ্রামে শহরের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে বদ্ধপরিকর, সেখানে গ্রামীণ এই রাস্তার বেহালদশার দীর্ঘ সময় পার হলেও তা সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের। এই রাস্তায় শত শত শ্রমিক এবং আশপাশের এলাকার একমাত্র ভরসা। বর্তমান সরকারের আমলে ১৫ বছরে রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হলেও এই রাস্তা কারো চোখে পড়ে না। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তা তলিয়ে যায় পানিতে। পরে কাঁদায় পরিণত হয়। দীর্ঘদিনের ভোগান্তি নিয়েই রাস্তা দিয়ে চলতে হচ্ছে স্থানীয়দের। মনে হয় আমরা বড়ই হতভাগা। 

স্থানীয়রা আরো জানান, রাস্তাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহিউদ্দিন কিছু অংশ ইটসলিং করে দিয়েছিলেন। সেই সলিং এখন ভেঙে গিয়েছে। কিন্তু কোন চেয়ারম্যান মেম্বারের নজরে পড়ে না। এই ব্যস্ততম রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন বিসিক এলাকার হাজার হাজার শ্রমিক যাতায়াত করে। এছাড়া প্রায় ৫ গ্রামের অসংখ্য স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী এবং কৃষক চলাফেরা করে। আর সেই রাস্তা সারাবছর পানি আর কাঁদায় জর্জরিত থাকে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন চলবে? আমরা এই রাস্তার কারণে ফসল সঠিক সময়ে বাজারে নিয়ে যেতে পারি না। ফলে আমরা পণ্যের সঠিক মূল্য পাই না। চলাচলের জন্য এই রাস্তা ছাড়া বিকল্প পথ না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে আমাদের। শুকনো মৌসুমে কোনমতে চলাচল করা গেলেও চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় বর্ষা মৌসুমে। দিনে কিংবা রাতে চলাচলের সময় রাস্তার কাঁদা জমে থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয়  মানুষের। যাতায়াত করতে পারে না ভ্যানগাড়ি, সাইকেলসহ ছোটখাটো যানবাহন।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসরাফিল হোসেন জানান, বর্ষা মৌসুমে বন্যা ও ঝড় বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাসমূহ সংস্কারর করে চলাচলের উপযোগী করা হবে।  উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের প্রস্তাবনা যাচাই-বাছাই করে উপজেলা প্রকৌশলী প্রাক্কলন তৈরি করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবেন। তিনি বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন। তাই আপাতত কোন রাস্তার টেন্ডার আহ্বান করা হচ্ছে না। তবে জন দুর্ভোগ লাঘবে ক্ষতিগ্রস্ত সব রাস্তা নিয়ম অনুযায়ী সংস্কার করা হবে। 

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট গোলাম মহিউদ্দিনের সাথে মুঠোফোন যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

বাবু/জেএম
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত