বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ পলিটিক্যাল সায়েন্স নেটওয়ার্ক’ (বিপিএসএন)-এর শিক্ষক-গবেষকগণ এক বিবৃতির মাধ্যমে বলেন, ‘গণতন্ত্র সর্বোৎকৃষ্ট রাজনৈতিক জীবন-ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচিত।’
তবে, এর চর্চা কিছুতেই সহজসাধ্য নয়। এর জন্য প্রয়োজন, পরমতসহিষ্ণুতা, জনগণের ইচ্ছার স্বাধীনভাবে প্রকাশের সুযোগ ও জন-ইচ্ছাকে সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র বিন্দুতে স্থান দেওয়া।
‘বাংলাদেশের মতো পরস্পরবিরোধী ধারায় বিভক্ত সাংঘর্ষিক, প্রতিহিংসা-প্রতিরোধপরায়ণ রাজনীতির ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের চর্চা খুবই দূরূহ। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সম্মুখে তা এক কঠিন চ্যালেঞ্জ। তাই বলে, হাত গুটিয়ে বসে থাকার কোন অবকাশ নেই। শান্তি-শৃঙ্খলা, উন্নয়ন-অগ্রগতি, অন্য কথায়, দেশ-জাতি-জনগণের স্বার্থে কোনরূপ সহিংসতা কাম্য হতে পারে না।’
যারা এরূপ পন্থা অবলম্বন করে, তা কখনো তাদেরও স্বার্থের অনুকূলে যায় না। অতীতের অভিজ্ঞতাও সে কথা বলে। পরমুখী হয়ে দেশের রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান কাক্সিক্ষত ও সম্মানজনক যেমন নয়, তেমনি তা সম্ভবও নয়। দেশের নেতৃবৃন্দরাই এর সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।
বাস্তব পরিস্থিতির তাগিদ মেনে নিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি বা মানুষের প্রাণহানি ও সম্পদ বিনষ্ট করে-এমন পন্থা পরিত্যাগ করে এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের দেশ শাসনের ধারা অব্যাহত রাখার স্বার্থে সাংবিধানিক ধারায়, শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা নিরসনে অগ্রবর্তী হওয়ার জন্য আমরা সরকার ও বিরোধী দল নির্বিশেষে সকল নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে ভয়-ভীতিহীন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘আমাদের জন্য একান্ত অপরিহার্য।’
আমাদের মনে রাখতে হবে, গণতন্ত্রের চর্চা ক্ষণিকের কোন বিষয় নয় তা সার্বক্ষণিক। এর অব্যাহত চর্চার মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান-কাঠামো গড়ে ওঠার সুযোগ পায়। যা ব্যতীত গণতন্ত্র কখনো নিরাপদ-নির্বিঘ্ন বা টেকসই হতে পারে না। আর গণতন্ত্র টেকসই হলে শুধু এক পক্ষই নয়, বস্তুত সকল পক্ষই কোনো না কোনোভাবে বিজয়ী হয়।
বিবৃতিদানকারীরা হলেন: ‘অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ (সাবেক উপাচার্য, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক ড. মাহফুজুল হক চৌধুরী (ভাইস চ্যান্সেলর, চট্টগ্রাম ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি), অধ্যাপক মু. আনসার উদ্দিন (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. আল মাসুদ হাসানুজ্জামান (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক ড. নাসিম আখতার হোসেন (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. ভূঁইয়া মনোয়ার কবির (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়), ড. জালাল ফিরোজ (পরিচালক, সেন্টার ফর পার্লামেন্ট স্টাডিজ ঢাকা), অধ্যাপক ড. গোবিন্দ চক্রবর্ত্তী (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোহরাব হোসেন (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. শামসুন্নাহার খানম, (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক ড. হাসান জাকিরুল ইসলাম (শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক ড. জায়েদা শারমীন (শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. আসমা বিনতে ইকবাল (জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়), ড. ফেরদৌস জামান (বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশন (ইউজিসি), অধ্যাপক ড. রফিক শাহরিয়ার (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), ড. মামুন আল মোস্তফা (সহযোগী অধ্যাপক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), জনাব শরিফুল ইসলাম (রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়), ড. শরিফ আহমেদ চৌধুরী (পরিচালক বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ডেমক্রেসি), ড. নিবেদিতা রায় (সহযোগী অধ্যাপক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়), মিসেস নাজিয়া আরেফা (সহকারী অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়)।’
বাবু/জেএম