বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই ২০২৫ ২ শ্রাবণ ১৪৩২
বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই ২০২৫
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা ও নালা-খালে পড়ে মৃত্যু
চসিক মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যানের ব্যর্থতা দায়ী
কামরুজ্জামান রনি, চট্টগ্রাম
প্রকাশ: বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩, ৭:০১ PM
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা ও নালা-খালে পড়ে প্রাণহানির জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যানের ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন ৭৯% নাগরিক। গত ২৯ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত পরিচালিত ‘জনমত জরিপে’ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে নিজেদের এই মতামত জানান।

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা ও নালা-খালে পড়ে প্রাণহানির জন্য কার ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন? ২৯ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত চলা এই জনমত জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১২% চসিক মেয়র এবং ৫% মতামত দাতা সিডিএ চেয়ারম্যানের ব্যর্থতাকে পৃথক দায়ী বলে মনে করছেন। জরিপের ২% কেউ দায়ী নন বলে মত জানিয়েছেন। 

২০২১ সাল সাল থেকে চট্টগ্রাম নগরীর খোলা নালা ও অরক্ষিত খালে পড়ে এখন পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজনের মৃতদেহ আজ অবধি উদ্ধার হয়নি। সর্বশেষ চলতি আগস্ট মাসে ২৭ তারিখ চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর রঙ্গিপাড়া এলাকার একটি নালায় পড়ে নিখোঁজ হয় শিশু ইয়াসিন আরাফাত। পরদিন ২৮ আগস্ট ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে। এর আগে ৭ আগস্ট সকালে দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের ইসলামিয়া হাট বাদামতল এলাকায় নালায় পড়ে নিপা পালিত (১৯) নামের হাটহাজারী সরকারি কলেজের এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়।

এমন পরিস্থিতিতে আয়োজিত জনমত জরিপে ২৪ ঘণ্টায় অংশ নেওয়া ১৬৪৫ জনের মধ্যে ১৩১২ জন চসিক মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যান উভয়ের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন। ৩৪ জন কেউ দায়ী নন বলে মত জানিয়েছেন। চসিক মেয়রের ব্যর্থতাকে দায়ী বলে মনে করেছেন ২০৮ জন আর সিডিএ চেয়ারম্যানের ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন জরিপে অংশ নেয়া ৯১ জন। 

জরিপে গাজী আরাফাত হোসেন সাজ্জাদ কমেন্টসে লিখেছেন, “তারা উভয়ের মধ্যে সমন্বয়হীনতা হলো বড় সমস্যা।” আরিফ নামের একজন লিখেছেন, "উভয়ে দায়ী। তবে উক্ত এলাকার কাউন্সিলররাও এর দায় এড়াতে পারে না। আওরঙ্গজেব শিবলু ফরাজী লিখেছেন, আমাদের ও দায়বদ্ধতা আছে। আমরা সবকিছু তো নালায় ফেলি  ডাস্টবিন ব্যবহার করি না।” চৌধুরী কায়সার হামিদ লিখেছেন, উভয়ের সম্বলিত প্রচেষ্টা আর নাগরিকদের সচেতনতা এবং সিটি কর্পোরেশন ও সিডিএর পরিকল্পিত উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি আধুনিক শহর গড়তে পারি।”

বিগত কয়েক বছর যাবৎ চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। অথচ প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের প্রায় শেষের পথে। অথচ সেই হিসেবে তেমন কোনো সুফল এখনো চট্টগ্রামবাসী পায়নি। দিন দিন জলাবদ্ধতার দুর্ভোগে থাকলেও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর মতন দুটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার কর্তারা একে অন্যের উপর দায় চাপিয়ে যাচ্ছেন। চসিক মেয়র রেজাউল করিম তবুও জলাবদ্ধতায় থাকা এলাকা কিংবা নালা-খালে পড়ে নিহতদের খোঁজ খবর নেন কিন্তু সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষকে এসবের ধারে কাছেও খুব একটা দেখা যায় না। বিভিন্ন ঘটনার পর গণমাধ্যমকর্মীরা সিডিএ চেয়ারম্যানের দেখা পান না। অভিযোগ আগে তিনি নিজের পছন্দের কিছু গণমাধ্যম ছাড়া তেমন কাউকে সাক্ষাৎ দেন না। বেশ কিছুদিন নীরব থেকে হঠাৎ নিজের পছন্দের গণমাধ্যমকে ডেকে সংবাদ সম্মেলনের নামে অন্যান্য সংস্থার ওপর দায় চাপানো ও নিজের পক্ষে সাফাই গাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেন।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত