কোনো ধর্মেই সাম্প্রদায়িকতা, সহিংসতা, ধর্মান্ধতা, উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদের স্থান নেই বলে জানিয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর সকল ধর্মের একই সুর হচ্ছে মানবতা। আমার কাছে ধর্ম তাই যা অন্যকে আনন্দিত করে, অনুপ্রাণিত করে। মানুষকে স্রষ্টার প্রকৃত অনুসন্ধানে উৎসাহিত করে।’ নিজের বোধের সুউচ্চে ধর্মবোধকে লালন করার মধ্যদিয়ে মানবমুক্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য তরুণ প্রজন্মকে আহ্বান জানান উপাচার্য।
শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মোজাফ্ফর আহমদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে আল্লামা রুমি সোসাইটি বাংলাদেশ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ যৌথভাবে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি বিকাশে বাংলার রুমি সৈয়দ আহমদুল হক’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য।
কোন জায়গায় মানবিক সমাজের সুরক্ষা হয় সেটি অন্বেষণের জন্য নতুন প্রজন্মকে আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘যার যার শক্তির মধ্যে যে ধর্মবোধ রয়েছে, সেটির মধ্যদিয়ে মানুষের সমাজের সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি। সেটি করতে গেলে কখনো, কখনো, প্রচলিত ধর্মভাবনার বাইরে এবং ধর্মভাবনার প্রয়োগিক দিকের দুর্বলতাগুলোকে নিয়ে বিশ্লেষণ করে অন্বেষণের দিকে ধাবিত হতে হয়। তাহলে যে মুক্তির সমাজ আমরা চাই যেখানে ধর্ম পবিত্র বিশ্বাস হিসেবে থাকবে কিন্তু বিভেদের চালক হিসেবে পরিচালিত হবে না।
পৃথিবীর ইতিহাস বলে, বহুবার আমরা ধর্মের নামে যুদ্ধ করেছি, সংস্কৃতির নামে যুদ্ধ করেছি। এর মধ্যদিয়ে মানবতাকে বিপন্ন করেছি। আমরা দেখেছি পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে একরাতে ধর্মের নামে বা অন্য কোনো নামে লাখো মানুষকে বের করে দিয়ে অন্য দেশে পাঠায়। তখন বিশ্বমানবতা নিশ্চুপ থাকে। আমি মনে করি সেটি হচ্ছে প্রকৃত ধর্ম যখন বাংলাদেশের মানুষ তাদের আশ্রয় দিয়েছে, পাশে রেখেছে। মানবিক বিশ্বব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে।’
প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্যসচিব ও আল্লামা রুমি সোসাইটি বাংলাদেশের সভাপতি ড. মো. আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যান্যদের মধ্যে বিশেষ অতিথি ছিলেন কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. অমিত দে, পিএইচপি গ্রুপের চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমান, সৈয়দ আহমদুল হকের পুত্র সৈয়দ মাহমুদুল হক। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন। এ ছাড়া সেমিনারে বিভিন্ন বিশিষ্টজন প্রবন্ধের উপর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা উপস্থাপন করেন।
বাবু/জেএম