খুলনার শিরোমণি শিল্পাঞ্চলের ব্যক্তিমালিকানাধীন বন্ধকৃত মহসেন, আফিল, সোনালী, এ্যাজাক্স, জুট স্পিনাসর্সহ সকল মিল চালু ও শ্রম আইন মোতাবেক শ্রমিক কর্মচারীদের বকেয়া পাওনা পরিশোধসহ ছয় দফা দাবিতে রাজপথ ও রেলপথ অবরোধ করেছে বেসরকারি পাটকল শ্রমিক কর্মচারীরা।
সকাল ১০টায় মিছিল সহকারে জনতা মার্কেট থেকে ফুলবাড়ীগেট রেললাইন এর উপর জড়ো হয়ে শ্রমিকরা সেখানে এক ঘন্টা অবস্থান শেষে খুলনা যশোর মহাসড়কের ফুলবাড়ীগেটের জনতা মার্কেটের সামনে রাজপথ অবরোধ করে। এ সময় সড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ওই এলাকায় দুই পাশে গাড়ী জমা হয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। শ্রমিকরা সেখানেই বেলা ১২টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। বেসরকারি পাট, সুতা, বস্ত্রকল শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের উদ্যোগে এই কর্মসূচী পালন করে তারা। তাদের অন্যান্য দাবিগুলো মধ্যে আছে সকল বন্ধমিল পূর্ণাঙ্গভাবে চালু, আইনসঙ্গত ভাবে কর্মী ছাটাই, অবসরকৃত শ্রমিকদের যাবতীয় পাওনা এককালীন পরিশোধ, শ্রমদপ্তরের ফরমেট অনুযায়ী চূড়ান্ত হিসেব দেওয়া, নূন্যতম মূল বেতন পাঁচ হাজার টাকা বাস্তবায়ন এবং রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা।
ফেডারেশনের সভাপতি শেখ আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সংগঠনের প্রচার সম্পাদক সাইফুল্লাহ তারেকের পরিচালনায় এ সময় বক্তৃতা করেন সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল খান, শ্রমিক নেতা শহিদুল্লাহ খাঁ, সাইফুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্বারী আসহাব উদ্দীন, লিয়াকত মুন্সি, ওবায়দুর রহমান, হুগলী বিস্কুট শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি কাজী মোস্তাফিজুর রহমান, মোঃ বাবুল হোসেন প্রমুখ।

কর্মসূচী পালনকালে শ্রমিকরা বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষিয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ি শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ’র আগ পর্যন্ত মিল থেকে কোন মালামাল বের হবে না। তারপরও মিলের মালামাল রাতের আধারে বের করা হচ্ছে। মহসেন জুট মিলের শ্রমিকরা নয় বছর অতিবাহিত হলেও তাদের চূড়ান্ত পাওনা আজও পায়নি, শিরোমনি হুগলী বিস্কুট কোম্পনীর শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ না করে শ্রমিক নেতা মোস্তাফিজ এর নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে মালিক কতৃর্পক্ষ। সোনালী, এ্যাজাক্স ও আফিল জুট মিলের শ্রমিকদের একই অবস্থা, মিল মালিকরা মিল দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা ব্যাংক লোন নিয়ে আসে সে টাকা অন্যখাতে ব্যায় করে।
আন্দোলনকারীরা আরও বলেন, পাওয়া টাকা না পেয়ে শ্রমিকরা অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। অসুস্থ হলে অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে পারেছেনা। তাই চলতি সপ্তাহের ভিতর শ্রমিকদের সমস্যা সমাধান করা না হলে আগামি ১৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ফুলবাড়ীগেট জনতা মার্কেট চত্বরে শ্রমিক জনসভা এবং ১৭ সেপ্টেম্বর রবিবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ফুলবাড়ীগেটে রাজপথ, রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করো হবে। দাবি বাস্তবায়ন না হলে প্রয়োজনে আগামীতে আরও কঠোর আন্দোলনের হুসিয়ারী দেন শ্রমিক নেতারা।
বাবু/এ.এস