শনিবার ৫ জুলাই ২০২৫ ২১ আষাঢ় ১৪৩২
শনিবার ৫ জুলাই ২০২৫
এর আগেও বিমানবন্দরে গিয়ে প্লেনে ওঠার চেষ্টা করে শিশুটি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ৫:৫৬ PM আপডেট: ১৩.০৯.২০২৩ ৫:৫৯ PM
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাসপোর্ট-বোর্ডিং পাস না নিয়েই কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে উঠে সিটে বসেছিল ১০ বছরের একটি শিশু। প্লেনটি উড্ডয়নের প্রস্তুতি নেওয়ার আগ মুহূর্তে বিষয়টি ধরা পরে। সোমবার মধ্যরাতে এ ঘটনা নিয়ে বিমানবন্দর জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। পাসপোর্ট-বোর্ডিং পাস ছাড়া একজন শিশু কীভাবে প্লেনে উঠে গেল—এ ঘটনায় বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠে।

এদিকে এ ঘটনায় ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, প্রত্যাহার করা হয়েছে বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশ, এভিয়েশন সিকিউরিটি (এভসেক), কুয়েত এয়ারওয়েজ ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং (বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স) প্রতিষ্ঠানের ১০ কর্মকর্তাকে।

শিশুটিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তদন্ত সূত্র জানিয়েছে, ৮-১০ বছর বয়সী ছেলেটি গোপালগঞ্জের একটি মাদরাসার শিক্ষার্থী। শিশুটি গত ৫ দিন আগে বাসা থেকে পালিয়ে যায়। তবে বাসা থেকে পালানো তার প্রথম নয়। এর আগেও একাধিকবার বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিল সে। পরে নিজে নিজেই বাড়িতে ফিরে যেত। তাই এবার পালানোর পর বাবা-মা আর পুলিশে খবর দেননি।

তদন্ত সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটি জানিয়েছে একান্ত কৌতূহলবসত প্লেনে ওঠেছে। গত তিন মাসে চারবার বাড়ি থেকে পালিয়ে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যায় সে। এর আগে প্লেনে চড়তে ব্যর্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গেছে। এবার কৌশল পাল্টে বিমানবন্দরে ঢুকে শিশুটি। একটি পরিবারের সঙ্গে কথাবার্তার মাধ্যমে মিশে যায় সে। তাই কেউ ধরতে পারেনি যে ছেলেটি সেখানে একা কিংবা তার কাছে কোনও পাসপোর্ট বা বোর্ডিং পাস নেই। তাকে এভসেক ও বিমানবন্দর থানা পুলিশ একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করলেও এর চেয়ে বেশি তথ্য পায়নি তারা।

বুধবার বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিজুল হক মিয়া বলেন, আগে মাদরাসায় পড়লেও বর্তমানে শিশুটি পড়াশুনা করছে না। পরিবার জানে সে বাড়ি থেকে বের হলেও কয়েকদিন পরে আবার ফিরে যায়, তাই পুলিশে জানায়নি। যেহেতু ঘটনাটি একজন শিশু ঘটিয়েছে আমরা শিশুদের তেমন জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারি না। তবে সে জানিয়েছে, বিমান দেখতে বিমানবন্দরে এসেছে, লোকজনের সঙ্গে হাটতে হাটতে প্লেনে ওঠেছে।

বিমানবন্দর থানা জানায়, শিশুটি বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানার বরইহাটি গ্রামের বাঁশবাড়িয়ায়। তার বাবার নাম ইমরান মোল্লা ও মা জেসমিন আক্তার। বুধবার ভোরে তাকে বাবা-মার কাছে হস্তান্তর করেছে বিমানবন্দর থানা পুলিশ। পাশাপাশি শিশুটির বাবা-মাকে ভবিষ্যতে শিশুর যত্ন নেওয়ার বিষয়ে আরও যত্নশীল হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

শিশুটির চলাফেরার ওপর বাবা-মা আরও নজর রাখবে বলেও পুলিশকে কথা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দর থানা পুলিশ। বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান জানান, অভিযুক্ত ১০ জনকে বিমানবন্দর থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় অধিকতর তদন্ত করতে তদন্ত কমিটি কাজ করছে।

এদিকে বিমানবন্দরে কর্মরত প্রত্যেক কর্মী ডিউটি পাস ব্যবহার করে চলাফেরা করেন। আর যাত্রীরা পাসপোর্ট ও বোর্ডিং পাস নিয়ে চলাফেরা করেন। এছাড়া বিমানবন্দরে ঢুকে ইমিগ্রেশনসহ প্রায় ৮-১০টি ধাপ পেরিয়ে প্লেনে চড়তে হয়। কোনো ধাপেও শিশুটিকে না আটকানোর বিষয়টি নিরাপত্তাহীনতা বলে মন্তব্য করেছেন অনেক যাত্রী। 

বাবু/জেএম
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত