পর্যটন রাজধানী কক্সবাজার যেমন সুন্দর তেমনি মাদকের স্বর্গরাজ্য বলা যায়। সারাদেশ থেকে আগত পর্যটকদের মাদক সাপ্লাইয়ে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। মাদক চোরাচালানে সীমান্ত উপজেলা-উখিয়া টেকনাফের কথা সবাই জানলেও কক্সবাজার শহরের হোটেল-মোটেল জোনে যে হাত বাড়ালেই মিলে মাদক এটি জানার কথা নয়।
সমুদ্র নগরী হোটেল মোটেলে থাকা ব্যক্তিদের কাছে ইয়াবা, বিদেশি মদ, গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদক পৌঁছে দিতে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কাজ করছে। এসব মাদক অবৈধ ভাবে সীমান্ত পার করে ঢুকে পড়ে কক্সবাজার শহরে। গত শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে র্যাবের হাতে আটক হয়েছেন দুই মাদক কারবারি। মিজবাহ উদ্দিন রাজু ও ইমরান হোসেন নামে এই দুইজন পুরো শহরে মাদক সাপ্লাই দিয়ে থাকেন। মিজবাহ উদ্দিন রাজুর বাড়ি হোটেল-মোটেল জোনের লাইটহাউস পাড়া আর ইমরানের বাড়ি পিএমখালীর মাইজপাড়া। তারা দুইজনই উঠতি বয়সী ছেলেদের লোভ দেখিয়ে মাদক সাপ্লাইয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। তাদের শেল্টার দেয়ার জন্য সরকার দলীয় কিছু নেতা জড়িত বলে সূত্র দাবি করছে।
পর্যটন শহরে মাদক বেচা-কেনা চক্রের সদস্যের মধ্যে মিজবাহ উদ্দিন রাজুর আপন ছোট ভাই রাকিবুল ইসলাম সন্ত্রাসী কর্মকান্ডও করে থাকেন। কিছু দিন আগে ডিবির হাতে বিদেশি মদ নিয়ে আটক হয়ে বের হয়েছেন। তাদের পৈত্তিক বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়। সেখান থেকে এসে মোহাম্মদ হোসেন গড়ে তুলেছেন লাইট হাউজ পাড়ায় বিশাল বাড়ি। ওই এলাকায় মাদক বেচা-কেনার জন্য একটি দোকান খুলেছেন রাজু ও রাকিবের বাবা মোহাম্মদ হোসনে। সেখানে পর্যটকদের জন্য কিছু জুতা ও অন্যান্য সামগ্রী বিক্রি করলেও তাদের মূল ব্যবসা মাদক। পুরো পরিবার মাদক কারবারে জড়িত এমন তথ্য দিয়েছেন এলাকাবাসী।
গত শনিবার কক্সবাজার র্যাব ১৫ এর চৌকস আভিযানিক দল গুমগা তলা পাঁকা সড়কের উপর অস্থায়ী চেকপোষ্ট বসিয়ে মোটর সাইকেলসহ বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ নিয়ে আটক করে রাজু ও ইমরানকে। তারা ঝাউতলার ব্যাচেলর হিসেবে একটি ভাড়া বাসা নিয়েছিলেন। সেখানে উখিয়া-টেকনাফ থেকে মাদক এনে মজুদ করতেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন মাদক সাপ্লাই দিতেন হোটেল-মোটেলে। তারা মাদক কারবার করে লাখ লাখ টাকা কামিয়েছেন। ইতিমধ্যে রাজু ও ইমরানকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান।
বাবু/জেএম