রবিবার ১৩ জুলাই ২০২৫ ২৯ আষাঢ় ১৪৩২
রবিবার ১৩ জুলাই ২০২৫
পুষে রাখা সংকটে পুড়ছে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন
রায়হান আহমেদ তপাদার
প্রকাশ: বুধবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৩, ৫:০২ PM

ইসরায়েলের ওপর মিসর ও সিরিয়ার আকস্মিক হামলার মধ্য দিয়ে ১৯৭৩ সালে চতুর্থ আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। ৭ অক্টোবর শনিবার ইসরায়েলের ওপর ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাসের বড় ধরনের হামলাকে কেন্দ্র করে ৫০ বছর পর আগের সে পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। হামাসের এই হামলাটি ছিল আকস্মিক ও অপ্রত্যাশিত। দিনটিও ছিল ইহুদিদের ছুটির দিন। ওই হামলার পর ইসরায়েলও গাজায় বিমান হামলা চালিয়েছে। স্থল অভিযানেরও পরিকল্পনা করছে তারা। কিছুদিন ধরেই গাজা উপত্যকায় উত্তেজনা বাড়তে দেখা গিয়েছিল। তবে ভাবা হচ্ছিল, গাজার শাসনে থাকা হামাস কিংবা ইসরায়েল কেউই চায় না উত্তেজনা আরও বাড়ুক। সে ধারণা মিথ্যা প্রমাণ করে হঠাৎ ইসরায়েল অভিমুখে বড় ধরনের অভিযান শুরু করে হামাস। ইসরায়েল এখন হতোদ্যম, নিজ ভাগ্যের নিয়ন্ত্রণ আর ইসরায়েলের হাতে নেই। এ দফায় হামাস ও ফিলিস্তিনের অন্য গোষ্ঠীগুলো যেভাবে যুদ্ধ করছে, ১৯৪৮ সালের পর তেমনটি আর দেখা যায়নি। ওই বছর আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের নির্মূল করে ইসরায়েল রাষ্ট্রের অভ্যুত্থান ঘটেছিল। এমনকি অর্ধশতাব্দী আগে ১৯৭৩ সালে যখন মিসর আচমকা ইসরায়েলে আক্রমণ করে, তখনো কেউ এতটা বিস্মিত হয়নি। ওই যুদ্ধকে ইসরায়েলিরা ইয়ম কিপ্পুর বলে অভিহিত করে। এবারকার হামলায় ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো হতবাক হয়ে গেছে। তাদের বিস্ময়ের ঘোর কাটছে না। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রতি তাদের নাগরিকদের যে আস্থা ছিল, তাতেও ভয়ংকরভাবে চিড় ধরেছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, শুধু ৭ অক্টোবর শনিবারই ২৫০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। ১৯৭৩ সালে ইসরায়েলিরা একটা প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করেছে। এবার যারা যুদ্ধ করছে, তাদের হাতে কালাশনিকভ ছাড়া কিছু নেই। এটা অবিশ্বাস্য। ইসরায়ে- লের এই সেনা ও গোয়েন্দা ব্যর্থতা তাদের অনেক দিন ভোগাবে।

ইসরায়েল বছরের পর বছর ধরে গাজা উপত্যকার আশপাশে নজরদারির জন্য শৌখিন ও বহুমূল্য অবকাঠামো গড়ে তুলেছে। এই অঞ্চলকে তারা ২০০৭ সালে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছিল।ওখানে ক্যামেরা ও আকাশে ড্রোন ওড়ার কথা। এই বেষ্টনী অতিক্রম করা প্রায় অসম্ভব। ফলে ইসরায়েলের যে প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি, তাতে এই আঘাত অকল্পনীয়। কারণ, ৮২০০ নামে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর যে গোয়েন্দা ইউনিট আছে, তাদের কাছে ফিলিস্তিনিদের একান্ত ব্যক্তিগত তথ্যও আছে। অথচ তারা জানতে পারেনি যে কয়েকশ বা হাজারখানেক যোদ্ধা এমন জটিল ও ব্যাপক হামলা চালাবে। তাদের কোনা ধারণাই ছিল না। ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ইসরায়েলি শহরে হেঁটে-ঘুরে বেড়াচ্ছেন, ইসরায়েলি নারী, শিশু ও বয়স্কদের জিম্মি করছেন, এর একটা গভীর প্রভাব ইসরায়েলি জনগোষ্ঠীর ওপর পড়বে। দেখা গেল, মানুষ ফিসফিস করে ফোনে বিভিন্ন নিউজ চ্যানেলকে খবর দিচ্ছেন তাঁরা একা হয়ে গেছেন। বাইরে গোলাগুলি হচ্ছে এবং সারাদিনেও সেনাবাহিনীর কোনো দেখা নেই। এই ঘটনা এত সহজে ইসরায়েলিরা ভুলবে না। তাহলে প্রশ্ন দাঁড়াচ্ছে, ইসরায়েল সরকার এখন কী করবে, তা পরিষ্কার নয়। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ভূমধ্যসাগর থেকে জর্ডান নদী পর্যন্ত সবটুকু এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। তাঁর এই অঙ্গীকার নিশ্চিতভাবেই ধাক্কা খেয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী প্রথমেই যা করতে চাইবে তা হলো, গাজাকে ধুলায় মিশিয়ে দেওয়া। এতে হতাহতের সংখ্যা হাজার ছাড়াবে দ্রুতই। ইতিমধ্যে বিমান হামলায় ২৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। কিন্তু সামরিক প্রেক্ষাপট থেকে এ ধরনের বিমান হামলার কোনো গুরুত্ব নেই। কারণ, এতে হামাসকে থামানো সম্ভব হবে না। ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা এখন পর্যন্ত ১৫০ ইসরায়েলিকে জিম্মি করেছেন। ফিলিস্তিনিদের বোমা মেরে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা এসব জিম্মিকে আরও বিপদের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

ইসরায়েলি সশস্ত্রবাহিনী গাজা পুরোপুরি দখল করে নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। তবে এ জন্য যে আত্মবিশ্বাস দরকার, সেটা তাদের নেই। তারপরও তারা যদি গাজা পুরোপুরি দখল করে নিতে চায়, তাহলে গাজার হাজার হাজার লোক নিহত অথবা বাস্তুচ্যুত হবেন। শত শত ইসরায়েলিও খুন হবেন। ইসরায়েল এমন এক পর্বে প্রবেশ করতে যাচ্ছে যেখানে তারা আর নিজেদের ভাগ্য নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। তাদের আত্মবিশ্বাস এখন তলানিতে। একই অবস্থা সেনাবাহিনীতেও। সেনাবাহিনী নিজেদের ওপর বিশ্বাস হারিয়েছে, ইসরায়েলিরা বিশ্বাস হারিয়েছে সেনাবাহিনীর ওপর। গাজা নিয়ে যেকোনো সিদ্ধান্তে এসবের ব্যাপক প্রভাব থাকবে।

গাজায় হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি, শরণার্থী সংকটের আশঙ্কা বড় পরিসরে যুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরি করতে পারে। এই যুদ্ধে লেবাননের হিজবুল্লাহ, ফিলিস্তিনের একাধিক গোষ্ঠী, পশ্চিম উপত্যকা ও জেরুজালেমের বেসামরিক জনগোষ্ঠী, সিরিয়া ও জর্ডানের যুক্ততার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। নেতানিয়াহু তাঁর ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মটরিচের পরামর্শ অনুযায়ী গাজা পুরোপুরি দখলের উদ্যোগ নিতে পারেন। অথবা তিনি আপসের চেষ্টা করতে পারে।

১৯৭৩ সালে যুদ্ধের পর ইসরায়েলিরা যুদ্ধ ও প্রাণহানির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। নেতানিয়াহু এখন যাই করুন না কেন, তাঁর সরকারের প্রতি চূড়ান্ত আঘাত এসেছে। এই হামলা তাঁর সরকারকে দুর্বল করবে। ফিলিস্তিনিদের দেয়াল দিয়ে আটকে রেখে চাবি ছুড়ে ফেলা এবং একই সঙ্গে দুবাইয়ের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার যে চেষ্টা নেতানিয়াহু করেছেন, তা কতটা অসার ছিল, সেটা প্রমাণিত হয়ে গেছে। যা ঘটেছে, সেটার দায়িত্ব তাঁকেই নিতে হবে। সীমান্ত পাহারা না দিয়ে ৩৩টি ব্যাটালিয়ন পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি স্থাপন কারীদের সুরক্ষা দিচ্ছে। নেতানিয়াহু সরকারে চরমপন্থী এবং উগ্র ধর্মীয় জাতীয়তাবাদীরা রয়েছেন, যাঁরা যেকোনো মূল্যে পশ্চিম উপকূলে ইহুদিদের বসতি স্থাপন করতে চান। 

কিন্তু অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের প্রতি তাদের এই অতি মনোযোগই পতনের কারণ হয়ে উঠতে পারে। অচিরেই আমরা এমন কথা শুনব যে কেন আমরা নিজেদের বিপন্ন করে এই অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের সুরক্ষা দিচ্ছি?

ইসরায়েল এমন এক পর্বে প্রবেশ করতে যাচ্ছে যেখানে তারা আর নিজেদের ভাগ্য নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। তাদের আত্মবিশ্বাস এখন তলানিতে। একই অবস্থা সেনাবাহিনীতেও। সেনাবাহিনী নিজেদের ওপর বিশ্বাস হারিয়েছে, ইসরায়েলিরা বিশ্বাস হারিয়েছে সেনাবাহিনীর ওপর। গাজা নিয়ে যেকোনো সিদ্ধান্তে এসবের ব্যাপক প্রভাব থাকবে। আরও বাজে পরিস্থিতি হবে তখন, যখন লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহও এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়বে। ইতিমধ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাদের সেনাদের শক্তি-সামর্থ্য বাড়ানোর আদেশ দিয়েছে। গাজায় বিমান হামলার পাশাপাশি সেখানে স্থল অভিযানের পরিকল্পনা চলছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে তারা।তবে হামাস ইসরায়েলি সেনা ও বেসামরিক নাগরিকদের জিম্মি করেছে। তাঁদের মানব ঢাল ও দর-কষাকষির মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারের আশা করছে হামাস। এটি একটি বড় জটিলতার বিষয়।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, আমরা বর্তমানে ওই এলাকার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার চেষ্টায় আছি। ব্যাপক হামলা চালানো হচ্ছে। বিশেষ করে গাজা উপত্যকার আশপাশের এলাকা গুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা পরিস্থিতির ব্যাপারে খুব নিবিড় ও পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করব। পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনাকে সামনে রেখে নিঃসন্দেহে ইসরায়েলের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা নিজেরাই নিজেদের প্রশ্ন করছেন, কেন তাঁরা আগে থেকে হামাসের হামলার আভাস পাননি। এত বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে তাঁরা কীভাবে ব্যর্থ হলেন। গাজা উপত্যকায় প্রায় ২৩ লাখ মানুষের বসবাস। পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের এক বছর পর ২০০৭ সালে হামাস গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয়।

এরপর ইসরায়েল ও মিসর গাজায় অবরুদ্ধ অবস্থা আরও জোরদার করে। তবে গাজায় বেকারত্ব প্রায় ৫০ শতাংশ। ২০২১ সালে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাতের পর মিসর, কাতার ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষের পরোক্ষ আলোচনা হয়। তখন হাজারো গাজাবাসীকে ইসরায়েলে কাজ করার অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে সমঝোতা হয়। আরও কিছু কড়াকড়িও শিথিল করার সিদ্ধান্ত হয়। গত সেপ্টেম্বরে ইসরায়েল সীমান্তে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে গাজার কর্মীদের জন্য দুই সপ্তাহ সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিল ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় আবারও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। এবার ইসরায়েল অভিমুখে রকেট হামলার শুরুতে হামাসের সশস্ত্রবাহিনীর অধিনায়ক মোহাম্মদ দেইফ ফিলিস্তিনিদের প্রতি আহ্বান জানান, তাঁরা যেন ইসরায়েলি দখলদারদের বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপে শামিল হয়। তবে এখন বড় প্রশ্ন হলো, ইসরায়েলের দখলকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম কিংবা ওই অঞ্চলের অন্য এলাকায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনিরা তাঁর আহ্বানে সাড়া দেবেন কি না। নিঃসন্দেহে ইসরায়েল একটি যুদ্ধের আশঙ্কা করছে এবং বিভিন্ন দিক থেকে এ যুদ্ধ শুরু হতে পারে। সর্বশেষ গত বছর গাজায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। জাতিসংঘের হিসাবে, ওই বছরের ১০ মে থেকে ২১ মে পর্যন্ত ইসরায়েলের সর্বাত্মক হামলায় প্রাণ গেছে ৬৭ শিশুসহ ২৪১ জনের। আহত প্রায় আড়াই হাজার। কিন্তু এই হিসাব দাপ্তরিকভাবে বাস্তবে তা আরও অনেক বেশি। এছাড়া প্রায় প্রতিদিনই নানা ছুতোয় ফিলিস্তিনিদের ওপর চড়াও হন, প্রাণ কেড়ে নেন ইসরায়েলি সেনারা। ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে নিহত ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেওয়া এক ফিলিস্তিনি যুবককে আটক করছেন ইসরায়েলি সেনারা।গুলিতে ঝাঁঝরা, বোমায় ছিন্নভিন্ন, আগুনে দগ্ধ, কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপের চাপায় পিষে-থেঁতলে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের লাশের মিছিল তাই থামে না।

প্রসঙ্গত, বধ্যভূমি, মৃত্যুপুরী, জল্লাদের মঞ্চ কোনো বিশেষণেই ফিলিস্তিনিদের ওপর চলমান গণহত্যা, নৃশংসতা-নিপীড়ন স্পষ্ট হয় না; কিছুতেই পাওয়া যায় না তাঁদের দুঃখ-দরিয়ার কিনারা! এইতো সেদিন ৩৪ বছর বয়সি এক ফিলিস্তিনি আইনজীবী গত মাসে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর গুলিতে নিহত হন। তাঁর স্বজনদের আহাজারি আজও বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাছাড়াও ফিলিস্তিনিদের ভূমি-ভিটা জবর দখল, তাঁদের অন্যায্য বিতাড়ন আর অবৈধ ইহুদিবসতি স্থাপনের আনুপাতিক হারে ফিলিস্তিনির সংখ্যা কমানোর সব ইন্তেজাম পাকা ইসরায়েলের। ইঙ্গ-মার্কিন মহব্বত-মদতে ইসরায়েলের একতরফা আগ্রাসন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে গাজা, পশ্চিম তীর তথা গোটা ফিলিস্তিন ভূমি।ফিলিস্তিনিদের বুকের পাঁজর গুঁড়িয়ে ইহুদিদের এই দখলবাজি চলছে বছরের পর বছর, দশকের পর দশক। তবু সভ্যতার কাণ্ডারিদের মুখে কোন আফসোস নেই।

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা কি শুধু ফিলিস্তিনিদের আত্মিক, ন্যায্য ও আইনসংগত দাবির মধ্যেই সীমাবদ্ধ, নাকি তা আজ বিশ্বজনীন মানবমুক্তির প্রাণভোমরাও? পঙ্গু শিশুর বেড়ে ওঠার অধিকারও যখন ছিনিয়ে নেওয়া হয়, পাখি শিকারের উল্লাসে খুন করা হয় নিরস্ত্র-নিরীহ মানুষকে, তখন মুখ বুজে থাকলে বিবেকও কি নীরব থাকে? মানবতা তো কিতাবে ছাপা ধারণামাত্র নয়, ন্যায়ের পক্ষে না দাঁড়ালে মনুষত্ব বিলুপ্ত হতে বাধ্য হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কালীন হলোকাস্টের নির্মমতাও যেন ছাপিয়ে গেছে ইসরায়েলের বর্বর কর্মকাণ্ডে। তাদের তাণ্ডবশক্তির নিচে মানবিকতার পদদলন আর কত দিন? আর কত দিনই-বা তা নিরবে চেয়ে চেয়ে দেখবে বাকি বিশ্ব? আর কত রক্তমূল্য পরিশোধে মানবমুক্তির সুখবর পৌঁছাবে ফিলিস্তিনি ভূমিতে? এই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

লেখক : গবেষক ও কলামিস্ট



বাবু/এ.এস

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত