রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানির জন্য আগামী ১২ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার (৬ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগ এই দিন ধার্যের আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তানীয়া আমীর।
গত ১ আগস্ট দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে পক্ষভুক্তের আবেদন করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ জামায়াতের সমর্থক ৪৭ নাগরিক। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় তাদের পক্ষে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নাল আবেদীন এ আবেদন করেন।
পরে জামায়াতের আইনজীবী প্যানেলের সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ সাংবাদিকদের বলেন, জামায়াতের নিবন্ধনের বিষয়ে আপিল বিভাগে বক্তব্য তুলে ধরতে ৪৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক আবেদন করেছেন।
আবেদনকারীদের মধ্যে জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, হামিদুর রহমান আজাদ, হাফেজা আসমা খাতুন, মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এম উমার আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুর রব এবং তিন জন বীর মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন।
এদিকে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে নিবন্ধন অবৈধ করার বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, রাজনৈতিক সভা, জনসভা বা মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে করা আবেদনে পক্ষভুক্ত হতে চেয়েছেন ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক। তারা শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা, লেখক, শিক্ষাবিদ ও বিশিষ্টজন। এ তথ্য নিশ্চিত করেন মামলার আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।
জামায়াতের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিটকারী মাওলানা সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ তিন জন হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে নিবন্ধন অবৈধ করার বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, রাজনৈতিক সভা, জনসভা বা মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং ১০ বছর পর রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করে নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করায় আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে পৃথক একটি আবেদন করে।
এমন আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। গত ২৬ জুন আপিল বিভাগের অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী এ আদেশ দেন।
এই ৪২ জন হলেন, শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আলীম চৌধুরীর স্ত্রী শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী, ক্যাপ্টেন (অবসরপ্রাপ্ত) শাহাব উদ্দিন আহমেদ বীর উত্তম, শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আজহারুল হকের স্ত্রী সৈয়দা সালমা হক, শাহরিয়ার কবির, রামেন্দু মজুমদার, মামুনুর রশীদ, শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ মাহমুদের মেয়ে শাওন মাহমুদ, শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ফয়জুর রহমান আহমেদ এর ছেলে জাফর ইকবাল, মুনতাসীর উদ্দিন খান মামুন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আবুল বারক আলভী, মেঘনা গুহ ঠাকুরতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ, মমতাজ জাহান, অধ্যাপক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ(মেজবাহ কামাল), বীর প্রতীক ক্যাপ্টেন কাজী আব্দুস সাত্তার,অধ্যাপক মাহফুজা খানম, রোকেয়া কবীর, শহীদ প্যারী মোহন আদিত্যর ছেলে নট কিশোর আদিত্য, শহিদ মুনীর চৌধুরীর ছেলে আসিফ মুনীর, শহীদ মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর ছেলে তানভীর শোভন হায়দার চৌধুরী, আবেদ খান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, মুজতবা আহমেদ মোর্শেদ, মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল), অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন, শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ড. আলীম চৌধুরী, খুশী কবীর, নিসার হোসেন, আহমেদ শামসুদ্দোহা, মোহাম্মদ রফিকুন নবী, আব্দুল মান্নান, মো. মনিরুজ্জামান, শেখ আফজাল হোসেন, ফরিদা জামান, বীরেন্দ্র কুমার সোম, আবুল হাশেম খান, এবিএম শামশুল হুদা, শামীম আক্তার, তানভীর মোকাম্মেল, হারুন হাবীব, ডা. সারওয়ার আলী ও সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।