প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনায় ১টি সেতু ও ১টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। তিনি ১৩নভেম্বর খুলনায় আসছেন। খুলনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও স্থনীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন এবং সমবায় মন্ত্রণালয় সেতু দু’টি বাস্তবায়ন করছে।
সূত্র জানিয়েছে, খুলনার জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার বসুন্দিয়াডাঙ্গা বাজার - মাগুরখালী চরচুরিয়া শিবনগর সড়কে ২৪৯০ মিঃ চেইনেজে ভদ্রানদীর উপর ৩১৫.৩০ মিটার পিসি গার্ডার সেতু।
সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে প্রাহিত হয়ে পশুর ও শিবসা নদীর মিলন স্থলে পতিত হয়েছে। নদীর পূর্ব পাশ্বের ১২টি ইউনিয়ন ও পশ্চিম পাশ্বের ৪টি ইউনিয়ন। নদীর পশ্চিম পাশ্বের সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলা ও খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার একাধিক গ্রোথ সেন্টার, হাটবাজার এবং অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে এর কাজ শুরু হয় এবং ২০২২সালে এর কাজ সমাপ্ত হয়। পকল্প ব্যয় ধরা হয় ২৮ কোটি ৪৬লাখ ৮৬ হাজার ২৭৮ টাকা।
ভদ্রা নদী দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনার একটি নদী। জেলার পশুর ও শিবসা নদীর মধ্যবর্তী ভূখন্ডকে বিভক্ত করেছে। শিবসা নদীর মিলন স্থালে পতিত হয়েছে। নদীর পশ্চিমপাশ্বের রয়েছে ৪টি ইউনিয়ন। রয়েছে সাতক্ষীরার তালা উপজেলা ও খুলনার পাইকগাছায় রয়েছে একাধিক গ্রোথ সেন্টার, হাট-বাজার এবং অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
সেতুটি নির্মিত হওয়ায় খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলা পাইকগাছা উপজেলা ও সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিকল্প সড়ক তৈরি হয়েছে। সেতুটি ব্যবহার করে পাইকগাছা জেলার কপিলমুনি জিসি ও তালা উপজেলার জাতপুর ও তালা জিসির সাথে সংযোগ স্থাপন করেছে। সেতুটি জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে তাছাড়া জনগণের যাতায়াতের জন্য অনেক সময় সাশ্রয় হবে। এই অঞ্চলের মানুষ এখন এক নিমিশে খুলনার শহরে পৌঁছাতে পারে। সেতু নির্মাণে এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে সুফল পেতে শুরু করেছে। তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য ও সবজি, ঘেরের মাছ, চিংড়ী, খামারীদের দুধ ও বিভিন্ন পণ্য পরিবহনে সহজতর হয়েছে।এছাড়া শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও অনেক ভোগান্তি কমেছে। এক সময়ে খেয়াঘাটের নৌকার কারণে অনেক রোগী পথেই মারা যেত, অনেক শিক্ষার্থী ঠিক সময়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে যেতে পারেনি। আজ আর সেই ভোগান্তি নেই। ফলে সেতুটি নির্মাণ করায় ডুমুরিয়া উপজেলা বাসীসহ খুলনার কপিলমুনি,পাইকগাছা, কয়রা, তালার মানুষ বর্তমানে মহাখুশি। এই সেতুর কারণে তাদের জীবনমানের অনেক পরিবর্তন হয়েছে।
এদিকে খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার পাইকগাছা জিসি-লস্কার বাজার- বাইনতলা বাজার-বগুলার চকবাজার শুড়িখালি বাজার- ভান্ডারপোল বাজার গিলাবাড়ী জিসি সড়কে ২৩০০মিঃ চেইনেজে কুড়ুলিয়া নদীর উপর ৭৪৮.৯০ মিঃ দীর্ঘ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে।
সূত্র আরো জানায়, কুড়–লিয়া নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ- পশ্চিমাঞ্চলের খুলনার একটি নদী। নদীটির দৈর্র্ঘ্য-১৩ কিঃমিঃ, গড় প্রস্ত ১৯৪ মিটার এর প্রকৃতি সর্পিলাকার, কুড়–লিয়া নদীটি পাইকগাছা উপজেলার লস্কর ইউনিয়নে প্রবাহমান কপোতাক্ষ নদ থেকে উৎপত্তিলাভ করেছে। পরবর্তী পর্যায়ে এ নদীর জলধারা জেলার একই উপজেলার একই ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মিনহাজ নদীতে পতিত হয়েছে। নদীটির উল্লেখ যোগ্য কোন শাখা প্রশাখা নেই। সমূদ্র উপক‚লীয় এলাকাদিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এ নদীতে জোয়ার-ভাটার প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। নদীতে সারা বছর ছোট-বড় নৌকা চলাচল করে। জেলেরা সারা বছর মাছধরে জীবিকা নির্বাহ করে। পাইকগাছা উপজেলার পানি নিষ্কাশনের জন্য নদীটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে।নদীটি শিবসা নদীতে মিলিত হয়ে বঙ্গপোসাগরে পতিত হয়েছে। সেতু নির্মানে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২০কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবান করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।
সেতুটি নির্মিত হলে পাইকগাছা উপজেলার পাইকগাছা-কয়রা সড়ক ও বটিয়াঘাটা-দাকোপ উপজেলা সড়কের সাথে একটি বিকল্প সড়ক তৈরি হবে। সেতুটি ব্যবহার করে সেতুর উত্তরপাশে ৬টি ইউনিয়ন ও দক্ষিনপাশে ৪টি ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগ স্থাপন হবে। সেতুটি বাস্তবায়িত হলে পাইকগাছা থেকে খুলনা জেলার যাতায়াতে প্রায় ৩০কি:মি: পথ কমে যাবে এবং একই সাথে সময় সাশ্রয় হবে। পাইকগাছা উপজেলা খুলনা জেলার একটি উপশহর হিসেবে গড়ে ওঠার সম্ভাবনা তৈরী হবে।এলাকার উৎপাদিত কৃষিপণ্য, ঘেরের মাছ, চিংড়ী, খামারীদের দুধ ও বিভিন্নপণ্য সহজে আনা-নেয়া করতে পারবে। এছাড়া শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ওআর ভোগান্তি থাকবে না। খেয়াঘাটের নৌকার কারণে অনেক রোগী পথেই মারা যেতো। অনেক শিক্ষার্থী ঠিকসময়ে পরীক্ষার কেন্দ্রে যেতে পারেনা। সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় সেই ভোগান্তি আর থাকবে না। সেতুর কারণে এলাকার জন-সাধারনের জীবন-মানের অনেক পরিবর্তন হবে।