কর্ণফুলী নদীর সীমানায় মাটি ভরাট/দখল/নির্মান কাজ বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, সিডিএ এর চেয়ারম্যান ও সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ ও পূর্ব পাড় দখল, করে সকল অবৈধ স্থাপনা নির্মান বন্ধ ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করে আরএসএস ও সিএস খতিয়ান অনুযায়ী বিশেষ সীমানা জরিপ করে তিন মাসের মধ্যে আদালতে উপস্থাপনের আদেশ দেন বিচারপতি মোঃ মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি মোঃ আতাবুল্লাহ এর আদালত।
সম্প্রতি একটি দৈনিকে কর্ণফুলী দখল করে তৈরি হচ্ছে ড্রাইডক শীর্ষক রিপোর্ট প্রকাশিত হলে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ (HRPB) বিগত ১২.১১.০২৩ইং তারিখ একটি রীট পিটিশন দায়ের করলে শুনানী শেষে অন্য আদালত রুল জারী করে নিলোক নির্দেশনা দেন বলে বাংলাদেশ বুলেটিনকে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
মজলিস মোরসেদ জানান, মাননীয় আদালত জরীপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে চট্টগ্রামের কর্ণফুলি নদীর পূর্ব ও দক্ষিণ সীমান্তে আনোয়ারা, কর্ণফুলি, পটিয়া ও বোয়ালখালি এলাকায় অবস্থিত নদীর মূল সীমানা সি এস/আর এস দাগ অনুসারে বিশেষ টিম এর মাধ্যমে জরিপ করে ৩(তিন) মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল এবং দখলকারীদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ দেন। (২) চট্টগ্রামের মেয়র, চট্টগ্রামের উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক-কে কর্ণফুলি নদীর দক্ষিণ ও পূর্ব পাশের আনোয়ারা, পটিয়া, কর্ণফুলি ও বোয়ালখালি এর মধ্যে অবস্থিত নদীর সীমানায় মাটি ভরাট/দখল/নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে নির্দেশ এবং ২(দুই) সপ্তাহের মধ্যে আদালতে এভিডেভিট দাখিলের নির্দেশ নিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি মোঃ মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি মোঃ আতাবুল্লাহ এর আদালত ৪ (চার) সপ্তাহের রুল জারী করে কর্ণফুলি নদীর দক্ষিণ ও পূর্ব পাশে মাটি ভরাট/দখল/নির্মাণ কাজ বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনী ঘোষণা করা হবে না এবং নদী রক্ষার জন্য কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এবং কর্ণফুলি নদীর দক্ষিণ ও পূর্ব পাশে স্থায়ী স্থাপনা, মাটি ভরাট ও দখল অপসারণের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না তা জানাতে বিবাদীদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন।
শুনানীতে এইচআরপিবি-এর পক্ষে কৌশুলী সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের চোখের সামনে কর্ণফুলি নদীর দক্ষিণ ও পূর্ব পাশে অবৈধ কাজ হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এ কাজের জন্য নদীর মূল প্রশস্ততা অনেক কমিয়ে অবৈধ দখলকারীদের সুযোগ করে দিয়েছে যা আইন ও সরকারী নিয়মকানুনের পরিপন্থি। তিনি বলেন, পরিবেশ আইন, ১৯৯৫ ও জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০ এর বিধান রয়েছে জলাধার ভরাট/দখল এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ায় কিন্তু বিবাদীরা চোখ বুজে সব সহ্য করছে। এমনকি নদী কমিশনের চেয়ারম্যান সরজমিন এলাকা ভ্রমন করে ডিজিটাল জরিপের মাধ্যমে দেখতে পেয়েছেন কর্ণফুলি ড্রাই ডক নদীর জায়গা দখল করছে এবং ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় নি। তাদের দখল কর্মকান্ড বর্তমানেও চলমান আছে।
এইচআরপিবি এর পক্ষে রীট পিটিশনার হলেন এডভোকেট মোঃ ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, এডভোকেট এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া এবং এডভোকেট রিপন বাড়ৈ। বিবাদীরা হলেন পরিবেশ, পানি উন্নয়ন, পরিকল্পনা, ভূমি, অর্থ, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সচিব, মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যান, ডিজিএলএ ও বিআইডাব্লিউটিএ চেয়ারম্যান, ডিজি পরিবেশ, ডিসি ও এসপি চট্টগ্রাম, পুলিশ কমিশনার চট্টগ্রাম, ইউএনও কর্ণফুলি, পটিয়া, বোয়ালখালি ও আনোয়ারা।
বাদীপক্ষে শুনানী করেন সিনিয়র এডভোকেট মনিজল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন এডভোকেট সঞ্জয় মন্ডল এবং এডভোকেট নাছরিন সুলতানা, সরকার পক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি।