দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনসহ মিয়ানমার ফেরার দাবিতে কক্সবাজারের টেকনাফে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা সমাবেশ করেছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়ছে। সমাবেশে সাধারণ রোহিঙ্গারা দ্রুত সময়ে তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারের ফেরত পাঠানোর দাবি জানান।
টেকনাফ শালবাগান রোহিঙ্গা সিআইসি কার্যালয়ের পাশে সাধারণ রোহিঙ্গারা বিভিন্ন দাবি ও স্লোগান সংবলিত প্লে কার্ড, ফেস্টুন নিয়ে অংশ নেয়। এছাড়া প্রতিটি সমাবেশে রোহিঙ্গারা জোর দাবি জানিয়েছেন তাদের দ্রুত মিয়ানমারে নিজেদের জন্মভিটায় ফেরত পাঠানোর জন্য।
শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতারা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে মিয়ানমার সরকারকে চাপ প্রয়োগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহবান জানান। এ সমাবেশে রোহিঙ্গা নেতা আয়াছ ও বদুল ইসলামসহ সাধারণ রোহিঙ্গারা বক্তব্য রাখেন।
টেকনাফ লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের ডেভেলমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘আমরা শরণার্থী জীবন আর চাই না। আমাদের নিজেদের দেশ আছে, সেদেশে বসবাস করা আমাদের অধিকার, মিয়ানমার আমাদের দেশ। সেখানেই আমরা চলে যেতে চাই।
এদিকে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, '‘আমরা আর শরণার্থী জীবন চাই না। সামনের দিনগুলোতে আমরাও আমাদের জন্মভূমি আরাকানে জীবন যাপন করতে চাই। বিশ্ব সম্প্রদায় আমাদের দেশে ফেরার ব্যাপারে যেন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়।’
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপ-সচিব) খালিদ হোসেন জানান, ‘শিবিরে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ন্যায্য দাবি-দাওয়ার কথা তারা বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরতেই পারেন। রোহিঙ্গারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মাধ্যমে তাদের দাবির কথা জানিয়েছেন। এই সমাবেশে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য পুলিশের সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে ছিল বলে জানিয়েছেন ১৬-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) মুহাম্মদ জামাল পাশা।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে ১৬-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) মুহাম্মদ জামাল পাশা জানান, ‘ মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার দাবিতে তাঁর ক্যাম্পে ৫টি জায়গায় ৭ হাজার মানুষ শান্তিপূর্ণ সমাবেশে অংশ নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। বর্তমানে নতুন ও পুরনো মিলে কক্সবাজারের ৩৪টি রোহিঙ্গা শিবির এবং নোয়াখালীর ভাসানচরে বসবাস করছেন প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা।
বাবু/জেএম