রাঙামাটি লংগদু উপজেলায় সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের দায়ে ইব্রাহিম নামের এক যুবককে ১৩বছর পর যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।
সোমবার রাঙামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক এইএম ইসমাইল হোসেন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) সাইফুল ইসলাম অভি। দন্ডিত মোঃ ইব্রাহিম (৪৩) রাঙামাটি লংগদু উপজেলার আঠারকছড়া ইউনিয়নের উত্তর ইয়ারিংছড়ি গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার রায়ের আদশে জানা যায়, আসামি মোঃ ইব্রাহীম (ধর্মান্তরিত, পূর্ব নাম- শ্রী কাঞ্চন কুমার বিশ্বাস) গত ১৫/০৬/২০১১ খ্রি. তারিখ দুপুর অনুমান ০২:৩০ ঘটিকার সময় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার লংগদু থানার অধীন বড় উল্টাছড়ি সাকিনে অবস্থিত লিটন চাকমার খামার বাড়ী হতে এজাহারকারী সাধন বিকাশ চাকমার ৭ম শ্রেণীতে পড়–য়া ১৩ বছর বয়সী কন্যাকে জোরপূর্বক মুখ চেপে ধরে তুলে পার্শ্ববর্তী কলা বাগানে নিয়ে তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষন করেন। ঐ সময় ভিকটিমের চিৎকারে সাক্ষীরা এগিয়ে আসতে থাকলে আসামি পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। সাক্ষীরা আসামিকে ধৃত করেন। পরবর্তীতে ভিকটিমের পিতা লংগদু থানায় এজাহার দায়ের করেন।
এ ঘটনায় ২০১১ সালের ১৫ জুন ওই শিক্ষার্থীর পিতা বাদী হয়ে ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে লংগদু থানায় মামলা করেন বলে জানান পিপি সাইফুল ইসলাম অভি। এস.আই. মোঃ সাফায়েত উল্লাহ তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
পিপি সাইফুল ইসলাম জানান, রাষ্ট্রপক্ষ মামলা প্রমাণের জন্য এজাহারকারী, ভিকটিম, ঘটনাস্থলের সাক্ষী, স্থানীয় জন প্রতিনিধি, উত্তর ইয়ারিংছড়ি সেনামৈত্রী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী, ঘটনার অন্যান্য সাক্ষী, চিকিৎসক, বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট, তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ মোট ১৭ জন সাক্ষী উপস্থাপন করে। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষ ঘটনার সমর্থনে দালিলিক সাক্ষ্য, ডাক্তারী সার্টিফিকেটসহ ঘটনার আলামতও আদালতে উপস্থাপন করে। রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থাপিত সাক্ষীদের সাক্ষ্য পর্যালোচনায় আদালতের সিদ্ধান্ত এই যে, ভিকটিমসহ অন্যান্য সাক্ষীগণ ঘটনার সময়, স্থান ও প্রকার বিষয়ে আসামির বিরুদ্ধে বিশ্বাসযোগ্য সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। ভিকটিমের জখমের সমর্থনে রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালের তৎকালীন জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী) ডাঃ নীহার রঞ্জন নন্দী সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। তার সাক্ষ্যে ধর্ষনের ঘটনা প্রমাণিত হয়েছে।
আজ সোমবার (২২জানুয়ারী) সকালে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের পাশাপাশি আগামী ৯০দিনের মধ্যে ১লক্ষ টাকা জরিমানা প্রদান করার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং জড়িমানার অর্থ ভিকটিম ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাবেন বলে জানান পিপি। এই মামলার রায়ের পক্ষে সন্তোষ প্রকাশ করেন বাদীপক্ষ।
অন্যদিকে এ মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী কাজী মইনুল ইসলাম রাযের অসন্তোষ প্রকাশ করে উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানান।