স্বল্প মূল্যে গরুর মাংস বিক্রি করায় ব্যবসায়ী খলিলকে হত্যার হুমকিদাতাকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে র্যাব-৩ ও র্যাব-৪ এর আভিযানিক দল ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে হুমকিদাতা ও তার সহযোগীকে গ্রেফতার করে।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
র্যাব জানায়, গত ১৮ জানুয়ারি রাজধানীর শাহজাহানপুরের মাংস ব্যবসায়ী খলিলুর রহমানের সেলফোনে একটি মোবাইল নাম্বার থেকে ফোন করে ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। কম দামে মাংস বিক্রি করলে তাকে ও তার ছেলেকে দুই দিনের মধ্যে গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এছাড়াও খলিল এবং তার ছেলেকে হত্যার জন্য গুলি ও পিস্তল প্রস্তুত করা হয়েছে জানিয়ে তার সেলফোনে পিস্তল, গুলি, রামদা এবং মাথা ছাড়া লাশের ছবি পাঠিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মাংস ব্যবসায়ী খলিল রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
পরবর্তীতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-৩ ও র্যাব-৪ এর আভিযানিক দল ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মাংস বিক্রেতা খলিলের কাছে চাঁদা দাবি করা ও হত্যার হুমকিদাতা মো. নুরুল হক (৬৭) এবং তার অন্যতম সহযোগী মোহাম্মদ ইমনকে (২২) গ্রেফতার করে।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা উক্ত ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বেশি মুনাফা লাভের আশায় গরুর মাংসের মূল্যবৃদ্ধি করে মাংসের বাজারে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে। এতে করে সীমিত ও নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে গরুর মাংস ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। গত বছরের ১৯ নভেম্বর থেকে রাজধানীর শাহজাহানপুরের মাংস ব্যবসায়ী খলিল তার ‘খলিল গোস্ত বিতান’-এ ৫৯৫ টাকায় প্রতি কেজি মাংস বিক্রি শুরু করেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপক সাড়া ফেলে। মাংস ব্যবসায়ী খলিলের দেখাদেখি আরো কিছু মাংস ব্যবসায়ী প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬০০ টাকায় বিক্রি করে।
পরবর্তীতে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর ভোক্তা অধিদপ্তর, মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন সম্মিলিত বৈঠক করে ৬৫০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহণ নেয়। এ সময় যে সকল মাংস ব্যবসায়ীরা ন্যায্য মূল্যে মাংস বিক্রি করে, অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করতে থাকে। এছাড়াও কিছুদিন আগে রাজশাহীর বাঘার আড়ানী হাটে ন্যায্য মূল্যে গরুর মাংস বিক্রি করায় একজন মাংস ব্যবসায়ীকে খুনের ঘটনা ঘটে।