চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৫ বছরে ৯৮৫ কোটি ১৩ লাখ ৯৩ হাজার টাকার উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করেছে।
২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ‘শেখ হাসিনা’ সেতু, কালিনগর সেতু, তর্ত্তিপুর সেতু, পুকুরিয়া সেতু, রামচন্দ্রপুর সেতুসহ অন্যান্য কাজগুলো বাস্তবায়ন করা হয়। সেতুগুলো নির্মাণের ফলে চরাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। লাঘব হয়েছে দুর্ভোগ। এখন মানুষ অনায়াসেই জেলা ও উপজেলা শহরে যাতায়াত করতে পারছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ বছরে ৫৫৬ কোটি ৪৩ লাখ ২২ হাজার টাকা ব্যয়ে ৯০৯ দশমিক ৫২ কিলোমিটার পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। একই সময়ে ১১৬ কোটি ৩৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৩৩৬ দশমিক ৩০ মিটার ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। ৫ কোটি ৯৩ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ব্যয়ে ৫০১ দশমিক ২৭ মিটার কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। একই সময়ে ১৬ কোটি ৫৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ১৪টি হাট।
জাতির সূর্যসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীর নিবাস, অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে ৩১টি, এতে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৫৮ লাখ ৫ হাজার টাকা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, শিবগঞ্জ, নাচোল, গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট উপজেলায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়েছে ৫টি। এতে ব্যয় হয়েছে ১১ কোটি ৮৯ লাখ ৩ হাজার টাকা। ৪৬ কোটি ১৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ৬৮ দশমিক ৫০ কিলোমিটার সেচ ক্যানেল। ১৩ কোটি ৬৫ লাখ ১০ হাজার টাকা ব্যয়ে তিনটি উপজেলা কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে ৩৩৩টি। এ কাজে ব্যয় হয়েছে ১৭৮ কোটি ৫৯ লাখ ১১ হাজার টাকা। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডায়াবেটিক হাসপাতালটিও নির্মাণ করেছে এলজিইডি। এতে ব্যয় হয়েছে ১৮ কোটি ৩১ লাখ ২০ হাজার টাকা।
৪ কোটি ৬০ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ৮টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস। ৫ কোটি ৯২ লাখ ১৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ১২১টি সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্প-১ এর আওতায় এইসব কাজ করা হয়। এছাড়া উন্নয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় ২০২টি সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে ৮ কোটি ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
এলজিইডি’র অধীন মোট রাস্তা রয়েছে ১৬৫২টি, রাস্তার পরিমাণ হচ্ছে ৩ হাজার ৪২৬ দশমিক ২০ কিলোমিটার, মোট পাকা রাস্তা ১ হাজার ৭৩২ কিলোমটিার।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জ’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোজাহার আলী প্রামানিক এইসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, জেলার ৫টি উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামের রাস্তা, ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করে চলেছে। এতে করে চরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা আরামদায়ক ও দুর্ঘটনামুক্ত হচ্ছে। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রামের পাকা রাস্তা ব্যবহার করে মানুষকে অতি দ্রুত আইনি সেবা দিতে পেরেছে। এতে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা উন্নত হচ্ছে। সব মানুষ তাদের পণ্য কম খরচে, সহজে নিকটস্থ বাজারে বাজারজাত করতে সক্ষম হচ্ছে। এছাড়া চিকিৎসাসেবা নিতে মানুষ দ্রুত হাসপাতালে যেতে পারছে।