ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং তার সঙ্গীসহ মোট ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ও প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। ইব্রাহিম রাইসির মরদেহ এখন উত্তর-পশ্চিম ইরানের তাবরিজে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সোমবার এই তথ্য জানান ইসলামিক রিপাবলিক রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (আইআরসিএস) প্রধান পীর হোসেন কোলিভান্দ। টেলিভিশনে দেওয়া মন্তব্যে তিনি বলেন, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে যেখানে তাবরিজের শহীদদের সমাধিস্থ করা হয়েছে সেখানে প্রেসিডেন্টসহ অন্যান্যদের মরদেহ পাঠানো হয়েছে। এর পর বৃহৎ আকারের অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে।
এর আগে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদুল্লাহিয়ান এবং তাদের সঙ্গে থাকা অন্য আরোহীরা মারা গেছেন বলে দেশটির পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
রাইসি যে হেলিকপ্টারটিতে যাত্রা করেছিলেন সেটির মডেল সম্পর্কে আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত প্রকাশিত বিভিন্ন ছবি এবং ভিডিওগুলো থেকে বোঝা যাচ্ছে, ইব্রাহিম রাইসি এবং তার সঙ্গীদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি ছিল বেল ২১২ মডেলের, যা যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই হেলিকপ্টারটি মাঝারি আকারের যেখানে ১৫টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে পাইলটের জন্য একটি আসন এবং যাত্রীদের জন্য বাকি ১৪টি।
জানা যায়, রোববার আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে যান ইব্রাহিম রাইসি। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন।
সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন ইব্রাহিম রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা অন্য কর্মকর্তারা।
পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়।
দুর্ঘটনার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি উদ্বিগ্ন না হতে ইরানের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রপরিচালনায় কোনো বিঘ্ন ঘটবে না।’
এদিকে ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পার্বত্য এলাকায় হেলিপকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার স্থান থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্যদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার কয়েক ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালানোর পর তাদের লাশ উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন।