২০১০ সালের মার্চ মাসে নিজের গায়ে হলুদের সদাই করতে ফেনী শহরে যান বর। রাত গভীর হলেও বর বাড়ি ফেরেননি। বরকে খোঁজাখুঁজিতে ব্যস্ত পরিবার বাধ্য হয়ে বন্ধ করে দেন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। অবশেষে সেই বরের সন্ধান মিললো রাঙ্গামাটি জেলার তবলছড়ি উপজেলায়, তাও নিখোঁজের ১৪ বছর পর।
বিয়ের সদাই করতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া সেই বরের নাম মোস্তাফিজুর রহমান খোকা মিয়া। তিনি ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের পালগিরি গ্রামের জালাল মেম্বার বাড়ির মৃত আবদুর রাজ্জাকের ছেলে।
খোকা মিয়ার বোন বলেন, আমার ভাই দীর্ঘ ১৪ বছর আগে তার গায়ে হলুদের কাপড়-চোপড় কেনার উদ্দেশ্যে ফেনীতে যান। বাড়িতে ফিরে না আসলে দীর্ঘ এ সময় তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে সন্ধান পায়নি। হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় সোনাগাজী থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছি। প্রশাসনও ভাইকে খুঁজে বের করতে পারেনি।
কিছুদিন আগে আকাশ নামে এক প্রতিবেশী কাজের সুবাদে রাঙ্গামাটি জেলার তবলছড়ি যায়। সেখানে জামে মসজিদের পাশে আমার ভাইকে চা দোকানে অবস্থান করতে দেখে আকাশ। ভাইয়ের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি সে আমাদের জানায়। পরে বুধবার রাতে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সুফিয়ানকে সঙ্গে নিয়ে তবলছড়ি গিয়ে ভাইকে শনাক্ত করে স্থানীয় ব্যক্তিদের সহায়তায় বাড়িতে ফিরিয়ে আনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সুফিয়ান বলেন, খোকা মিয়া তবলছড়িতে স্থানীয় মোস্তাফা নামের এক ব্যক্তির আশ্রয়ে ছিলেন। মোস্তফা আমাদের জানায় ১২ বছর পূর্বে খোকা মিয়াকে তবলছড়িতে ঘোরাঘুরি করা অবস্থায় দেখতে পায়। তখন সে তার নাম ঠিকানা-জানাতে পারেনি। সেসময় থেকে মোস্তফার আশ্রয়ে থেকেই রাজমিস্ত্রীর জোগালি হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে থাকে খোকা মিয়া।
এই ইউপি সদস্য আরও বলেন, নিখোঁজ হওয়ার পূর্বের কোনো ঘটনা মনে করতে পারছে না খোকা মিয়া। আমাদের ধারণা, কেনাকাটা করার জন্য যাওয়ার পথে হয়তো মলম পার্টির খপ্পরে পড়ে সে নিখোঁজ হয়। চলাফেরা স্বাভাবিক হলেও খোকা মিয়ার কথাবার্তায় অসংলগ্নতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। পূর্ব পরিচিত কাউকে সে চিনতে পারছে না। মানসিক সুস্থতার জন্য অতি দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে।