পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় প্রত্যন্ত এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার নিম্নমূখী, দায়সারা পাঠদান ও বিদ্যালয় চলাকালিন সময়ে বহিরাগত শিক্ষকের প্রাইভেট পড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। এতে গোটা উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষায় বেহাল দশা বিরাজ করছে।
ইতিপূর্বে ওয়ার্ডভিত্তিক শিক্ষার্থী সংকটের কারনে পাঠদান একিভূত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা দপ্তর একটি প্রস্তাবনা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠালেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
জনাগেছে, ভাণ্ডারিয়ায় ১৬৩টি প্রথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে মধ্যে ধাওয়া ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের ৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এ ওয়ার্ডে স্কুল বেশি হওয়ায় ও যত্রতত্র কিণ্ডারগার্টেন স্কুল গড়ে ওঠায় চরম শিক্ষার্থী সংকট দেখা দিয়েছে। অপরদিকে বিদ্যালয়গুতে চলছে নানা অনিয়ম।
উপজেলার ১১৯ নম্বর পশারিবুনিয়া আর্দশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মঙ্গলবার সরেজমিনে স্থানীয় সাংবাদিকরা সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, ওই বিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষকের বিপরীতে বিদ্যালয়ে উপস্থিত তিন জন। চলমান শ্রেণীকক্ষে মন্টু মণ্ডল নামে একজন বহিরাগত প্রাইভেট শিক্ষা পাঠদান করছেন। অন্য কক্ষগুলোতে পাঠদান চলছেনা। শিক্ষকরা অফিস কক্ষে গল্প গুজবে ব্যস্ত সময় পার করছেন আর বাকি শিক্ষার্থীরা খেলাধূলায় মত্ত। পাঁচ শ্রেণিতে কাগজে কলমে ৩৫জন শিক্ষার্থী থাকলেও উপস্থিত আছে সাতজন । এ ওয়ার্ডের বাকি বিদ্যালয়ের চিত্র প্রায় অভিন্ন।
১১৩ নম্বর পূর্ব পশারিবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতল ভবন থাকলেও এক কক্ষে চলছে তিনটি শ্রেণির পাঠদান। বাকি কক্ষগুলো তালাবদ্ধ। এ বিদ্যালয়ে কাগজে কলমে ৪২জন বিপরীতে তিন শ্রেনীর মোট ৮জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। চার শিক্ষকের বিপরিতে বিদ্যালয় উপস্থিত আছেন দুই জন শিক্ষক।
১৫৮নম্বর পশারিবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাথীর সংখ্য ৫০জনের নিচে। প ম শ্রেণিতে পরীক্ষা দিচ্ছে মাত্র দুইজন।
১৩৪ নম্বর পশারিবুনিয়া নাথপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে,পরীক্ষা দিচ্ছে চার শিক্ষার্থী, প্রশ্নপত্রে উত্তর লিখতে সহযোগিতা করছেন কর্তব্যরত শিক্ষক। চারজন শিক্ষকের বিপরীতে উপস্থিত আছেন দুই জন। এছাড়াও ৫৬ নম্বর পশারিবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাগজে কলমে ২২ জন শিক্ষার্থী থাকলেও বিদ্যালয়ে প্রতিদিনের উপস্থিত অর্ধেক। ১১১ নম্বর উত্তরপূর্ব পশারিবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে মাত্র ছয় জন।
শিক্ষকরা দাবি করে বলছেন, খুব কাছাকাছি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কিন্ডারগার্ডেন স্কুল থাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো কমছে শিক্ষার্থী সংখ্যা। ফলে অনীহা বাড়ছে পাঠদান কার্যক্রমে।
ভাণ্ডারিয়া উপজেলা শিক্ষাকর্মকর্তা মো. অহিদুল ইসলাম শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কম হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, শিক্ষকদের অনিয়ম ও অবহেলার বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থী সংকট কাটাতে বিদ্যালয়গুলো একীভূত করে পাঠদানের প্রস্তাব উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। কতৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।