বুধবার ২ জুলাই ২০২৫ ১৮ আষাঢ় ১৪৩২
বুধবার ২ জুলাই ২০২৫
শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে অচল ৫৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০২৪, ১:২৯ PM আপডেট: ০২.০৭.২০২৪ ২:৩৪ PM
নতুন সর্বজনীন পেনশন ‘প্রত্যয়’ স্কিমে অন্তর্ভুক্তি চান না পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এই স্কিমকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতৃত্বে হওয়া এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছে দেশের ৫৫টি বিশ্ববিদ্যালয়। 

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কার্যত অচলাবস্থা বিরাজ করছে। ফেডারেশন ঘোষণা দিয়েছে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছেন ১৬ হাজারের কিছু বেশি৷ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যা ৩৪ হাজার৷

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সব বিশ্ববিদ্যালয়েই ক্লাস, পরীক্ষা ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ আছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমিতিও শিক্ষকদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে কর্মবিরতিতে গেছেন৷ অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি খোলার দাবিতে শিক্ষার্থীরা সোমবার লাইব্রেরির সামনে ইটপাটকেল ছুড়েছেন৷

দাবি না মানা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য এই কর্মবিরতি চলবে বলে জানিয়েছেন ফেডারেশনের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুঁইয়া৷ তারা সর্বজনীন পেনশন ‘প্রত্যয়’ এর প্রজ্ঞাপন বাতিল ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সুপার গ্রেডে অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল চালুর দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেছেন৷

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মমিন উদ্দিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্ত করার প্রজ্ঞাপন জারির পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচজন অধ্যাপকের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়৷ ওই কমিটি বৈষম্যের জায়গাগুলো স্পষ্ট করেছে৷ ওই প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হয়েছে৷ প্রতিবেদনের সঙ্গে আমরা সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা একমত৷ তাই আমরা আন্দোলন শুরু করেছি৷ আমরা আগের সরকারি পেনশনেই থাকতে চাই৷’

ড. মো. মমিন উদ্দিন বলেন, ‘এখন যে সরকারি নিয়মে আমরা পেনশন পাই, তাতে আমাদের বেতন থেকে কোনো টাকা কাটা হয় না৷ পুরোটাই সরকার বহন করে৷ কিন্তু নতুন নিয়মে আমাদের বেতনের শতকরা ১০ ভাগ কেটে রাখা হবে৷ আর একজন অধ্যাপক অবসরের সময় গ্রাচুইটি হিসাব এককালীন ৮০ লাখ টাকা পান৷ উনি যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন পেনশন পাবেন৷ মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী বা স্বামী মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত ওই পেনশন পাবেন, কিন্তু নতুন নিয়মে গ্রাচুইটি নেই৷ আবার ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত পেনশন দেওয়া হবে৷ পেনশনভোগীর স্বামী বা স্ত্রীর ক্ষেত্রেও তাই৷’

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভুঁইয়া বলেন, ‘সরকারি চাকরিজীবীদের আগামী বছর সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় নেওয়া হবে৷ তাদেরটার নাম হবে সেবক৷ তাদের জন্য আলাদা কেন? আর এক বছর পরে কেন? আমাদেরও সরকার সেবকে নিক এবং একই সময়ে নিতো৷ আমাদের ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হলো কেন? এসব কী? এর নিশ্চয়ই ভিন্ন উদ্দেশ্য আছে৷ এটা অবশ্যই বৈষ্যম্যমূলক৷’

অধ্যাপক নিজামুল হক ভুঁইয়া বলেন, ‘আমরা এই পেনশনে যে ক্ষতি ও বৈষম্য তা গবেষণা করে সরকারকে জানিয়েছি৷ শিক্ষামন্ত্রী এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে দেখা করেছি৷ কিন্তু, আমরা কোনো সমাধান পাইনি৷ তাই বাধ্য হয়ে আমরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু করেছি৷ আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলবে৷ এটা আমাদের মর্যাদা ও অস্তিত্বের প্রশ্ন৷’
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত