দেশের জনপ্রিয় ধারার সংগীতে পরিণত হয়েছে ব্যান্ডসংগীত। তারই ছোঁয়া পাওয়া গেল এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে। চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষার প্রশ্নের কোড নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। কেননা এবারে পরীক্ষার প্রশ্ন সাজানো হয়েছে ব্যান্ডের নামে।
শুধু বাংলাদেশি ব্যান্ড দিয়েই সাজানো হয়নি প্রশ্নপত্রের সেট, বরং আছে কলকাতার বাংলা ব্যান্ডের নামও। যা এখন রীতিমতো ভাইরাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যেখানে বিভিন্ন বোর্ডের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নেপত্রে ওয়ারফেজ, অ্যাশেস, আভাস, চিরকুট ও ফিডব্যাক ব্যান্ডের পাশাপাশি ময়মনসিংহ বোর্ডের প্রশ্নে কলকাতার পরশপাথর, নিওন ব্যান্ডদলের নামও ছিল।
পরীক্ষার্থীরা বলছেন, সেট কোডে এসব নাম দেখে বিস্মিত হয়েছেন তারা। নামগুলো তাদের কাছে অদ্ভুত মনে হয়েছে। এরপর ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর সবাই এটিকে নিয়ে মজাও করছে।
উচ্চ মাধ্যমিকের প্রশ্নের সেটকোডে এমন নামকরণ নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন ময়মনসিংহের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ, এটিকে অনেকে বলছেন অপ্রাসঙ্গিক ।
সোহেল রানা নামে এক শিক্ষক বলেন, ‘এবার আমরা যে সেটকোডগুলোতে যে নামগুলো দেখলাম তা অপ্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে আমার কাছে। বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ততা খুবই কম। এখানে লেখকের নাম আনা যেন কিংবা যে অঞ্চলের পরীক্ষা হচ্ছে সেই অঞ্চলকে প্রতিনিধিত্ব করে এমন শব্দ ব্যবহার করে যেত।’
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর মহানগর সম্পাদক আলী ইউসুফ বলেন, এটি আসলে রুচির ব্যাপার। যে যেমন রুচিকে ধারণ করেন তেমন রুচিশীল বিষয় তিনি উপস্থাপন করেন। আগে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে দেশের ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধারণ করে এমন শব্দ থাকতো, এগুলো বাদ দিতে ব্যান্ডের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ আমরা বুঝতে পারছি যে যারা এটি করেছেন তারা দেশপ্রেমের মধ্যে নাই।
কবি ও সংগঠক শামীম আশরাফ বলেন, ‘আমরা কোনোভাবেই এটিকে মেনে নিতে পারি না। আমাদের ব্রহ্মপুত্রের নামে দেয়া যেত, মহুয়া-মলুয়া কিংবা গীতিকার অনেক চরিত্রও ছিল। কিন্তু এমন ব্যান্ডের নাম দেখলাম যা আমাদের দেশেরই না। এতে আমাদের ছেলেমেয়েদের কী মেসেজ দিচ্ছি আমরা?’
ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. আবু তাহের জানান, সেট কোডের ব্যাপারে কিছুই জানেন না তারা। নামকরণে কাজ করে আন্তঃবোর্ড সমন্বয় কমিটি।