কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) একজন সমন্বয়ককে ‘হত্যার হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। হুমকিপ্রাপ্ত সমন্বয়ক হলেন তালাত মাহমুদ রাফি।
হুমকি দেওয়া অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন হৃদয় আহমেদ রিজভী। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সিএফসি গ্রুপের কর্মী।
কোটা পূণর্বহালের প্রতিবাদে গত সোমবার থেকে আন্দোলন করে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত পাঁচদিন ধরে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন তারা। যতই দিন যাচ্ছে আন্দোলন বেগবান করে তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এক অডিও বার্তা ও ফেসবুকে ভিডিও বার্তায় হুমকির ব্যাপারে ভুক্তভোগী তালাত মাহমুদ রাফি জানান, আন্দোলনে সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করার কারণে কিছু প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টায় তার পরিবারের কাছে ফোন দিয়ে একজন ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করে তাকে হত্যার হুমকি দেয়। আন্দোলন থেকে সরে না আসলে তাকে হত্যার পর লাশ গুম করে ফেলা বা অ্যাম্বুল্যান্সে করে লাশ পাঠানোর হুমকি দেয় তার পরিবারকে।
তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, এই মুহূর্তে আমি নিরাপত্তার অভাবে ভুগছি। জানতে পেরেছি, হুমকি দেওয়া ব্যক্তি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হুমকি দেওয়া ব্যক্তি হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হৃদয় আহমেদ রিজভী। তিনি চবি ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক গ্রুপ চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) গ্রুপের কর্মী। বিশ্ববিদ্যালয়ে এই গ্রুপের কর্মীরা থাকেন শাহ আমানত হলে। হৃদয় এই হলে চারতলার একটি কক্ষে থাকেন।
হুমকির বিষয়ে জানতে চেয়ে হৃদয়কে ফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তার ফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে চবি ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি মির্জা খবির সাদাফ বলেন, এই নামে কাউকে আমি চিনি না। তার সঙ্গে ছাত্রলীগের নাম জড়াবেন না।
শিক্ষার্থী্দের চার দফা দাবি
১. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা।
২. পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠনপূর্বক দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সমস্ত গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেয়া (সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ছাড়া)।
৩. সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেয়া।
৪. দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।