কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ মহাকাব্যের বীর বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, এটা একটা ঘটনা আমি গ্রামের মধ্যে এসেছি। কিন্তু বিষয়টা এটা না। বিষয়টা হলো এই জায়গাটা হলো মহাকাব্যের জায়গা। মহাকাব্যের যে বীর থাকে, আবু সাঈদ সেই বীর। এটা নিয়ে যুগে যুগে লেখালেখি হবে, স্মরণ করবে সাঈদকে। আজকে সে মাটির নিচে শুয়ে আছে।
শনিবার (১০ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় রংপুরের পীরগঞ্জে নিহত আবু সাঈদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আবু সাঈদ সারা জাতির জন্য, ন্যায়ের জন্য, মুক্তির জন্য বুক খুলে দাঁড়িয়ে ছিল। ছবি দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। একটা ছেলে বন্দুকের সামনে হাত উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, মারেন। গুলি করছে একটু টলটল করছে আবার দাঁড়িয়ে আছে, তারপর আরেক গুলি। এই সেই লোক (আবু সাঈদ)। কাজেই এ ঘটনা ভুলার কোনো সুযোগ নেই। শুধু এটা পীরগঞ্জের বিষয় না, বাংলাদেশের বিষয় না, এটা সারা দুনিয়ার বিষয়।
তিনি বলেন, আবু সাঈদ যে কাজটি করেছে। এটা নিয়ে যুগযুগান্তরে কবিতা হবে, উপন্যাস হবে, নাটক হবে। মানুষ স্মরণ করবে তাকে। আমাদের কাজ হলো যে স্বপ্নের পেছনে দাঁড়িয়ে সে বুক পেতে দিয়েছিল সে স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হবে। এটা আমাদের সারা জাতির একটা কর্তব্য। আমরা শুধু এখানে এস কবর জিয়ারত করে চলে গেলাম। তা না । সারা জাতিকে আমরা বলতে চাই যে লক্ষ্য নিয়ে আবু সাঈদ বুক পেতে দিয়েছিল। যার কারণে কোটি কোটি ছেলে-মেয়ে বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে গেছে। ভয় পায় নাই। আবু সাঈদ পথ দেখিয়ে গেছে। আজকে আমরা সেই কারণে নতুন বাংলাদেশ পেলাম। এই নতুন বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব এখন আমাদের সবার।
গত ১৬ জুলাই দুপুর ২টার দিকে রংপুরের খামার মোড় থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর ফটকের সামনে যান। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাঁধে।
একপর্যায়ে পুলিশ প্রায় ২০০ রাউন্ড গুলি ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এ সময় পুলিশের গুলিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হন।