ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছেলে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলগুলোকে মাদকের আখড়ায় পরিণত করেছিল শাখা ছাত্রলীগের কিছু সংখ্যক নেতাকর্মী। ছেলেদের পাঁচটি আবাসিক হলের অন্তত অর্ধশতাধিক কক্ষ মাদক সেবনের জন্য ভিআইপি কক্ষে পরিণত করা হয়েছিল। কক্ষগুলোতে নিয়মিত সেবনের আড্ডা বসিয়ে নিরাপদে মাদক সেবন করতো তারা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও বহিরাগত মাদকসেবীদের অবাধ যাতায়াত ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহের একাধিক সূত্র ধরে এ তথ্য বেরিয়ে আসে।
সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পদধারী বেশ কয়েকজন নেতা মদ গাঁজা, ফেন্সিডিল ইয়াবাসহ বিভিন্ন নেশাদ্রব্য মাদকে আসক্ত ছিল। তাদের সংস্পর্শে থাকা কর্মীরাও নিয়মিত মাদক সেবন করতো।
মাদক সেবনের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ১২ টি, শেখ রাসেল হলে ৬ টি, শহীদ জিয়াউর রহমান হলে ৮ টি, লালন শাহ হলে ৯ টি এবং সাদ্দাম হোসেন হলে ১০ টি ভিআইপি রুম ছিল। এছাড়াও ছাত্রলীগের জুনিয়র কর্মীরা হলের গনরুমে মাদক সেবন করতো।
এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে থাকা শিক্ষার্থীরা খুব সহজেই মাদকদ্রব্যের সাথে পরিচিত হয়েছেন। ফলস্রুতিতে অনেক শিক্ষার্থী মাদকে আসক্ত হয়েও পড়েছেন।
এক শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ্ হলে উঠি। সেখানে নিয়মিত ছাত্রলীগের ভাইয়েরা গাঁজা সেবন করতো। এভাবে আমিও একসময় সেবন করে আসক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। আল্লাহর রহমতে পরে ফিরতে পেরেছি।
সম্প্রতি ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সরকারের পতন হয়। পরে ছাত্রলীগের দখলে থাকা বিভিন্ন কক্ষ থেকে বিভিন্ন অস্ত্র, মদের বোতল, গাঁজা সেবনের সরঞ্জাম ইত্যাদি উদ্ধার করে শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হল থেকে এক ছাত্রলীগ কর্মী কক্ষে থাকা অবস্থায় তার রুমে গাঁজা পাওয়া যায়।
এদিকে গত ২০২২ সালে ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক এলাকা থেকে গাঁজাসহ হাতেনাতে আটক করে ইবি থানা পুলিশ। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।