এক বছরের মধ্যে লেবাননে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে দুই ঘণ্টাব্যাপী অভিযান চালানো হয়েছে। এতে কয়েক রকেট লাঞ্চার ছোড়া হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন অবকাঠামোতেও হামলা চালানো হয়েছে।
শুক্রবার (২০ সেপ্টম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবাননের এ হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে দেশটির এ হামলায় মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সর্বাত্মক যুদ্ধ পরিস্থিতি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেড়ে গেছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্ররা ইসরায়েলকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থার বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েলির যুদ্ধবিমান জেজিন শহরের মাহমুদিহ, কাসর আল-আরুশ ও বিরকেট জাব্বুর এলাকায় বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।
লেবাননের নিরাপত্তা বাহিনীর তিনটি সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বৃহস্পতিবার লেবাননে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
এর আগে মঙ্গলবার থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে ত্রিশজনের অধিক হিজবুল্লাহ সেনা নিহত হন। এ ঘটনায় তারা ইসরায়েলকে দায়ী করে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রত্যয় জানিয়েছে। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ বলেছে, এ হামলার প্রতিশোধ গ্রহণে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ।
বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ বলে, ‘অন্যান্য দিনের মতো তারা গাজা, গাজার জনগণ ও তাদের প্রতিরোধের প্রতি সমর্থন জানিয়ে অভিযান চালিয়ে যাবে। তবে মঙ্গলবারের হত্যাকাণ্ডের জন্য অপরাধী শত্রু (ইসরায়েল) কঠোর শাস্তির অপেক্ষায় আছে। চলমান প্রতিরোধ হামলার থেকে পৃথক একটি প্রতিশোধের পথ তৈরি করেছে শত্রুরা।’
এদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের কাছ থেকেও কঠোর বার্তা এসেছে। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতির সঙ্গে ফোনালাপে এরদোয়ান বলেন, আঞ্চলিক সংঘাত ছড়িয়ে দেওয়ার ইসরায়েলি চেষ্টা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
ফোনালাপে পেজার হামলায় এরদোয়ান দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের জন্য প্রার্থনা করেছেন। তিনি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। এরদোয়ান আরও বলেন, এই অঞ্চলে সংঘাত ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ইসরায়েলের প্রচেষ্টা অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
এ ছাড়া ইরানও ইসরায়েলের দিকে আঙুল তুলেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেসকিয়ানের ওয়েবসাইটে বলা হয়, পশ্চিমা শক্তি ও যুক্তরাষ্ট্র যে জায়নবাদীদের অপরাধ, গণহত্যা, গুপ্তহত্যা সমর্থন করে তা পেজার বিস্ফোরণের ঘটনা আবারও প্রমাণ করে।