চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন শমসের পাড়াস্থ বাইন্নার পোল এলাকায় সন্ত্রাসীরা গুলি করে এক যুবককে হত্যা করেছে৷ নিহত যুবকের নাম আফতাব উদ্দিন তাহসিন (২৭)। হত্যাকান্ডের তিন ঘন্টা আগে নিহত তাহসিন তার ফেসবুকে সেই সকল সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একটি নিউজ শেয়ার করে স্টাটাসে লিখেছিল- প্রশাসন চুপ কেন?
সোমবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে ৫ টার দিকে নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন শমসের পাড়া মেডিকেল কলেজের অদূরে বাইন্নার পোল দক্ষিণ বাড়ীর সামনে কয়েকজন দুর্বৃত্তরা মিলে তাহসিনকে গুলি করে। আহত অবস্থায় ভিকটিমকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আফতাব উদ্দিন তাহসীন (২৭) ৪ নং ওয়ার্ডের দিলা মিস্ত্রি বাড়ীর মোঃ মুসা'র ছেলে।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় একদল চিহ্নিত সন্ত্রাসী ইতিপূর্বে তাহসিনসহ অন্যান্যদের কাছে চাঁদা দাবি করে ফাঁকা গুলি ছুড়েছিল৷ এই বিষয়ে চান্দগাঁও থানায় আজিজ নামের এক ব্যক্তি একটি সাধারণ ডায়েরিও করেছিল৷ আজ সেই সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য দিবালোকে তাহসিনকে গুলি করে হত্যা করেছে। তাহসিন ইট বালি সরবরাহের কাজ করতো৷
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, চান্দগাঁও থানাধীন শমসের পাড়া মেডিকেল কলেজের অদূরে বাইন্নার পোল দক্ষিণ বাড়ীর সামনে একটি নির্মানাধীন ভবনে মালামাল নামাচ্ছিলো৷ সেই সময় একটি গাড়ীতে চড়ে চারজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এসে প্রকাশ্যে তাহসিনকে খুব কাছ থেকে একাধিক রাউন্ড গুলি করে স্থান ত্যাগ করে৷
তাহসিনের বন্ধু ও স্বজনরা এই হত্যাকান্ডের জন্য স্থানীয় শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন প্রকাশ বুড়ির নাতি সাজ্জাদকে দায়ী করছেন৷ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উপস্থিত নিহতের একাধিক বন্ধু বলেন, তাহসিন ইট বালি সাপ্লাইয়ের ব্যবসা করতো৷ সাজ্জাদ ইতিপূর্বে তাহসিনের কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল৷ সেই চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাহসিনকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়৷ আজ হত্যাকান্ডের তিন ঘন্টা আগেও তাহসিন তার ফেসবুকে এই সন্ত্রাসী বাহিনীর বিষয়ে করা একটি জাতীয় দৈনিকের নিউজ শেয়ার করে লিখেছিল- "প্রশাসন চুপ কেন? ডবল মার্ডার হওয়ার ২মাস হয়ে গেছে এখনো একজন সন্ত্রাসীও গ্রেফতার হয়নাই"
উল্লেখ্য, গত ২৯ আগস্ট চট্টগ্রামের বায়েজিদের কুয়াইশ এলাকায় একই সন্ত্রাসী বাহিনীর গুলিতে দুজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- মাসুদ কয়সার ও মোহাম্মদ আনিস। আনিস কুয়াইশ এলাকার মৃত ইসহাকের ছেলে। মাসুদ হাটহাজারী শিকারপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদ রফিকের ছেলে। এই দুইজনকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলায় আসামী করা হয় সাজ্জাদ হোসেন প্রকাশ বুড়ির নাতি সাজ্জাদ সহ তার চার সহযোগীকে৷ সেই দুই হত্যাকান্ডের পরও সন্ত্রাসীরা বায়েজিদ, চান্দগাঁও থানা এলাকায় প্রকাশ্য অস্ত্রহাতে মহড়া দিত মর্মে অভিযোগ উঠলেও আইন শৃংখলা বাহিনী এই বাহিনীকে আইনের আওতায় আনতে পারেনি৷ ইতিপূর্বে নির্মানাধীন ভবনে অত্যাধুনিক অস্ত্রহাতে সন্ত্রাসীদের মহড়ার ভিডিওসহ স্বচিত্র খবর বাংলাদেশ বুলেটিনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়।
হত্যাকান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিএমপি চান্দগাঁও থানার ওসি (তদন্ত) মো. সবেদ আলী। তিনি জানান, ‘ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিস্তারিত পরে জানাতে পারব।’