গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে নতুন রূপে ফেরানোর চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটির অভ্যন্তরে চলছে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার। এর প্রেক্ষিতে ৫ আগস্টের পর প্রতিদিন পুলিশের বিভিন্ন পদে আসছে নতুন মুখ।
এছাড়াও গত তিন মাসে বদলি ও পদায়ন পেয়েছে অস্বাভাবিক গতি। এ সময়ে সারা দেশে পোশাকধারী দুই লাখ দুই হাজার পুলিশের বিপরীতে রদবদল করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৪২ সদস্যকে। সে হিসাবে প্রায় ২৫ শতাংশ পুলিশের চেয়ার বদলে গেছে। অল্প সময়ে এত সংখ্যক পুলিশ সদস্যের কর্মস্থল বদলের ঘটনা দেশে আগে কখনো হয়নি।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের পর ১৮ অতিরিক্ত আইজিপির চেয়ার বদল করা হয়েছে। রদবদলের তালিকায় আছেন ডিআইজি ১২৪, অতিরিক্ত ডিআইজি ১৬১, পুলিশ সুপার ২৪৪, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ৪০০, সহকারী পুলিশ সুপার ২২৭ জন। এ ছাড়া নন-ক্যাডার পদে রদবদল হয়েছে পরিদর্শক (নিরস্ত্র) ২ হাজার ১১২, পরিদর্শক (সশস্ত্র) ৪৩, পরিদর্শক (শহর ও যানবাহন) ২৯৪, উপপরিদর্শক (এসআই) ৪ হাজার ১১৬, সার্জেন্ট ১৮৮, টিএসআই ২৭, এসআই (নিরস্ত্র) ৭৮, এএসআই ৪ হাজার ৬৬৮, এটিএসআই ৫৭, এএসআই (সশস্ত্র) ২৪৫ এবং নায়েক ৬১৫। আর তিন মাসে কনস্টেবল রদবদল হয়েছে ৩১ হাজার ৪২৪ জন।
নীতিনির্ধারকরা বলেছেন, কাজে গতি আনতে এই বদলি। গেল দেড় দশকে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়ায় পুলিশ। গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশও দেখা গেছে। পুলিশ এ পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার চেষ্টায় আছে। যারা নতুনভাবে পদায়ন পাচ্ছেন, তাদের নিজ নিজ এলাকার অপরাধীদের নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানতে কিছুটা সময় লাগছে। অপরাধীরা এর সুযোগ নিতে পারে। কিছুদিন গেলে রদবদলের প্রভাব দৃশ্যমান হবে। কারণ, প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ঘটনাপ্রবাহ এবং অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ পুলিশের সামনে আসছে।
সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছিলেন, সরকার পরিবর্তনের প্রেক্ষাপট ঘিরে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি একটু উন্নতি হলেও সন্তোষজনক নয়। আপনারা জানেন, ঢাকার প্রায় সব পুলিশকে আমরা চেঞ্জ করছি। তাদের অলিগলি চিনতেও সময় লাগবে। তাদের ইন্টেলিজেন্স নেটওয়ার্ক স্থাপন করতে সময় লাগবে। তবে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। সামনে আরো উন্নতি হবে।