বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫ ১ শ্রাবণ ১৪৩২
বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫
পাকিস্তানে জিহাদ করতে গিয়ে সাভারের যুবক নিহত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০২৫, ৮:৫৩ PM
বাংলাদেশের একাধিক যুবক পাকিস্তানে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার জিহাদে জড়িয়ে পড়েছে। এমনকি সেখানে গিয়ে ঢাকার সাভারের এক যুবকসহ আরও তিন বাংলাদেশি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। 

সম্প্রতি জিহাদ থেকে ফেরত আসা ফয়সাল (৩৩) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট। তিনি পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন।

এ ঘটনায় ছয় যুবকের নাম উল্লেখ করে গত ৫ জুলাই সাভার মডেল থানায় মামলা করেছে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের ইন্টেলিজেন্স শাখার পরিদর্শক আব্দুল মান্নান। মামলার অন্য আসামিরা হলেন আল ইমরান ওরফে ইঞ্জিনিয়ার ইমরান হায়দার, রেজাউল করিম আবরার, আসিফ আদনান, জাকারিয়া মাসুদ ও সানাফ হাসান। অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) এ ঘটনায় কাজ করছেন।

নিহত চার বাংলাদেশির মধ্যে একজন জুবায়ের, তার বাসা সাভারের আড়াপাড়া এলাকায়। দ্বিতীয় জন চট্টগ্রামের পটিয়ার এক যুবক, তার নাম জানতে পারিনি। তৃতীয় জন সাইফুল্লাহ্ গোরাবার মেয়ে এবং চতুর্থ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী রেজাউল করিম আবরার, যার বিস্তারিত পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

স্পেশাল ব্রাঞ্চের এক কর্মকর্তা বলেন, গত ২৭ এপ্রিল পাকিস্তানের উত্তর ওয়াজিরিস্তানে পাক-আফগান সীমান্তে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অভিযানে তেহরিক ই তালেবান পাকিস্তানের ৫৪ সদস্য নিহত হন। নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী এক তরুণ ছিলেন। তার নাম আহমেদ জুবায়ের। বাড়ি ঢাকার সাভারের আড়াপাড়ায়। এলাকার লোকজন ও বন্ধুবান্ধব তাকে যুবরাজ বলে জানেন। মূলত জুবায়ের ও গ্রেফতার ফয়সাল টিটিপির হয়ে বাংলাদেশে কাজ করতেন। ২০২৪ সালের ১৮ অক্টোবর জিহাদের উদ্দেশে জুবায়ের ও ফয়সাল একসঙ্গে ওমরা করার নামে সৌদি আরব যান। সেখানে ৯ দিন অবস্থান করে ভিসা নিয়ে পাকিস্তানে গমন করেন। 

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান থেকে ৬ নভেম্বর ভিসা নিয়ে আফগানিস্তান পৌঁছান। সেখানে তারা দুই জন অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ইমরান হায়দারের সঙ্গে দেখা করেন এবং যুদ্ধের প্রস্তুতি নেন। সেখানে বাংলাদেশি সাইফুল্লাহ গোরাবা নামে এক যুবক সপরিবারে বসবাস করতেন। একটি অভিযানের সময় এয়ার স্ট্রাইকে সাইফুল্লাহর দুই পা ও মেরুদণ্ড অকেজো হয়েছে। সাইফুল্লাহর স্ত্রী আহত হয়েছে এবং দুই বছর বয়সী মেয়ে মারা গেছে। ঘটনাটি শুনে ফয়সাল ভয় পান এবং বাংলাদেশে ফিরে আসেন। কিন্তু জুবায়ের খুব জেদি প্রকৃতির হওয়ায় সেখানে থেকে যান এবং একটি অভিযানে মারা যান। 

তিনি বলেন, আমাদের কাছে পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে পৃথক সময় চার জন নিহতের খবর রয়েছে। তাদের প্রত্যেকে জিহাদের উদ্দেশে দেশ ছেড়ে ছিলেন। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ থেকে ২৫ যুবক একই উদ্দেশে দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এমন তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। এর মধ্যে ছয় জন রয়েছে সাভার এলাকার। আমরা কাজ করছি, যাতে তারা আর না যায় এবং এই রাস্তা থেকে ফিরে আসেন।

এদিকে নিহত জুবায়েরের বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার ছেলে ‘শহীদ’ হয়েছে। তার জন্য দোয়া করবেন। এ ছাড়া কোনও কিছুই বলতে চাননি তিনি। 

জঙ্গিবাদে জড়িয়ে নিহত জুবায়ের সাভার কলেজে ইসলামিক স্ট্যাডিজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। সাভারের অধর চন্দ্র হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং আশুলিয়ায় অবস্থিত মির্জা গোলাম হাফিজ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত