বৃহস্পতিবার ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
বৃহস্পতিবার ৫ ডিসেম্বর ২০২৪
যদি মন কাঁদে, তুমি চলে এসো এক বরষায়...
মশিউর অর্ণব
প্রকাশ: বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮:৪৬ PM
যদিও তখন আকাশ থাকবে বৈরি
কদম গুচ্ছ হাতে নিয়ে আমি তৈরি
উতলা আকাশ মেঘে মেঘে হবে কালো
ছলকে ছলকে নাচিবে বিজলী আরো
তুমি চলে এসো, চলে এসো, এক বরষায়...

দেশের জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের জন্মদিন আজ। প্রয়াণের এত বছর পরও লেখকের জন্মদিনটি এখনও পাঠকদের কাছে বিশেষ দিন। তাঁর লেখায় কখনো কেউ হিমু হতে চেয়েছে আবার কেউ হতে চেয়েছে রূপা। 

হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে আজ নুহাশপল্লীতে ছিল নানা আয়োজন। পাশাপাশি লেখকের জন্মস্থানসহ সারা দেশেই পালিত হয়েছে হুমায়ূন ভক্তদের নানা অনুষ্ঠান। 

" align=

হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ডাকনাম কাজল। বাবা পুলিশ কর্মকর্তা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও গৃহিণী মা আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়।

" align=

হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন একাধারে কথাসাহিত্যিক, গল্পকার, গীতিকার, নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি বাংলা সাহিত্যে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর জনকও। 
নন্দিত নরকে

নন্দিত নরকে

১৯৭২ সালে প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশের পরপরই খ্যাতি লাভ করেন তিনি। বাংলাদেশে পাঠকপ্রিয় এ লেখক দুই শতাধিক ফিকশন ও নন-ফিকশন লিখেছেন। হিমু, মিসির আলির মতো চরিত্র দিয়ে লাখো-কোটি পাঠক ও ভক্ত তৈরি করেছেন এই কথার জাদুকর।
জোছনা ও জননীর গল্প

জোছনা ও জননীর গল্প

হুমায়ূন আহমেদকে বাংলাদেশের স্বাধীনতাপরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখকদের মধ্যে অন্যতম গণ্য করা হয়। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। বাংলা সাহিত্যে অসাধারণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ হুমায়ূন আহমেদকে একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন পদক দেয়া হয়।
হিমু ও রূপা

হিমু ও রূপা

হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক। উপন্যাসে তাঁর প্রতিভার বিস্তার ঘটলেও শুরুটা ছিল কবিতা দিয়ে। এরপর নাটক, শিশুসাহিত্য, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, চলচ্চিত্র পরিচালনা থেকে শিল্প-সাহিত্যের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি রেখে গেছেন প্রতিভার স্বাক্ষর। হুমায়ূন আহমেদই প্রথমবার বাংলাসাহিত্যে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীকে জনপ্রিয় করেন।
মিসির আলী সমগ্র

মিসির আলী সমগ্র

হুমায়ূন আহমেদের ১১৮টি গ্রন্থ প্রকাশ করেছে অন্য প্রকাশ। তাঁর প্রকাশিত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য বই হচ্ছে, জ্যোৎস্না ও জননীর গল্প, মধ্যাহ্ন, কিশোর সমগ্র, হিমুর আছে জল, লীলাবতী, হরতন ইস্কাপন, হিমুর বাবার কথামালা, আজ হিমুর বিয়ে, হিমু রিমান্ডে, মিসির আলীর চশমা, আমিই মিসির আলী, দিঘির জলে কার ছায়া গো, কিছু শৈশব, হুমায়ূন আহমেদের ভৌতিক অমনানিবাস, আগুনের পরশমণি, পাপ ৭১, শ্রাবণ মেঘের দিন।
দেয়াল

দেয়াল

হুমায়ূন আহমেদের প্রথম উপন্যাস 'নন্দিত নরকে' প্রকাশিত হয় ১৯৭২ সালে। উপন্যাসটি প্রকাশের পরই সাড়া জাগায়। তিনি ১৯৯৪ সালে 'একুশে পদক' লাভ করেন। এ ছাড়া তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮) লাভ করেন। 
বাকের ভাই

বাকের ভাই

তাঁর নির্মিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- শঙ্খনীল কারাগার, শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা, শ্যামল ছায়া ও ঘেটুপুত্র কমলা। হুমায়ূন আহমেদ প্রায় নব্বইটি একক নাটক পরিচালনা করেছিলেন। এগুলোর বেশিরভাগই দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছে এবং এই সময়ে এসেও সেই পুরনো নাটকগুলো দেখে এবং মুগ্ধতা প্রকাশ করে দর্শক।
হিমু সমগ্র

হিমু সমগ্র

তাঁর নির্মিত কয়েকটি জনপ্রিয় নাটক হলো- ‘তারা তিনজন’, ‘এই বরষায়’, ‘এনায়েত আলীর ছাগল’, ‘কনে দেখা’, ‘খোয়াব নগর’, ‘গৃহসুখ প্রাইভেট লিমিটেড’, ‘চৈত্র দিনের গান’, ‘ছেলে দেখা’, ‘নীতু তোমাকে ভালোবাসি’, ‘নুরুদ্দিন স্বর্ণপদক’, ‘পুষ্পকথা’, ‘বাদল দিনের প্রথম কদমফুল’, ‘বুয়া বিলাস’, ‘সমুদ্র বিলাস প্রাইভেট লিমিটেড’, ‘সবাই গেছে বনে’ ইত্যাদি। 
মধ্যাহ্ন

মধ্যাহ্ন

হুমায়ূন আহমেদের শরীরে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে মরণব্যাধি ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে যান। ২০১২ সালের ১৬ জুলাই সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। ১৯ জুলাই বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। 
নুহাশ, শীলা, নোভা, বিপাশা

নুহাশ, শীলা, নোভা, বিপাশা

২৩ জুলাই দেশে ফিরিয়ে আনা হয় হুমায়ূন আহমেদের মরদেহ। ২৪ জুলাই তাঁকে দাফন করা হয় তাঁরই সযত্নে গড়ে তোলা প্রিয় নুহাশপল্লীর লিচুতলায়।
প্রিয় নুহাশ পল্লীতে আড্ডারত হুমায়ূন আহমেদ

প্রিয় নুহাশ পল্লীতে আড্ডারত হুমায়ূন আহমেদ

পিতার কফিনে ক্রন্দনরত নুহাশ আহমেদ

পিতার কফিনে ক্রন্দনরত নুহাশ আহমেদ

সাহিত্যের প্রায় সব শাখাতেই হুমায়ূন আহমেদের ছিল সাবলীল বিচরণ। ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক ও প্রবন্ধ তথা সবক্ষেত্রেই তাঁর লেখনি বাংলা সাহিত্যে ভিন্নমাত্রা দিয়েছিল। এজন্যই বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় সাহিত্যিক বলা হয় তাঁকে। মৃত্যুর পরেও তিনি পাঠকের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন আজীবন।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







সোস্যাল নেটওয়ার্ক

  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক আউয়াল সেন্টার (লেভেল ১২), ৩৪ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত